মাও. মুফতি আব্দুল হক আহমদী ::
(পূর্ব প্রকাশের পর)
৭. মাহে রমজান দান-খয়রাতের মাস। অন্যান্য আমলের মতো এ মাসে দান-খয়রাত করার ফজিলত ও গুরুত্ব অনেক বেশি। বুখারী শরীফের হাদীসে আছে রাসুল (সা.) ছিলেন মানুষের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল। তাঁর দান অন্য সময় হতে রমজান মাসে অধিকতর বৃদ্ধি পেতো। জিবরিল (আ.) রমজানের প্রতি রাতে মহানবী (সা.) নিকট আগমন করতেন এবং তাঁরা পরস্পর কুরআন শুনাতেন। তখন রাসুল (সা.)-এর দানশীলতা কল্যাণবাহী বায়ুর চেয়েও অধিকতর হয়ে যেতো। অন্য হাদিসে আছে রমজান হলো সহানুভূতির মাস। অর্থাৎ গরিব, দুখী, এতিম, মিসকিন ও বিধবাদের প্রতি ন¤্র আচরণ করবে। তাদেরকে আর্থিক সাহায্য করবে। নিজের ইফতার সাহরির জন্য দশটা জিনিস তৈয়ার হলে তাদের জন্য কমপক্ষে দুই-চারটার ব্যবস্থা করবে। রমজানে গরিব দুখীদের অন্ন-বস্ত্রের ব্যবস্থা করে দিবে। কারণ হাদিসে আছে যে ব্যক্তি কোন গরিবকে খাওয়াবে এবং তাকে কাপড় পরিধানের ব্যবস্থা করে দিবে আল্লাহপাক তাঁকে জান্নাতের রিজিক খাওয়াবেন এবং জান্নাতি পোশাক পরাবেন। তাই আসুন আমরা মাহে রমজানে বেশি বেশি দান-খয়রাত করে জান্নাতের চিরশান্তির অধিকারী হই।
৮. মাহে রমজান সওয়াব বৃদ্ধির মাস। রমজান মাস মুমিনের নেক আমলের প্রতিদান বৃদ্ধির মাস এবং আখেরাতের পুঁজি অর্জনের সর্বশ্রেষ্ঠ সময়। দুনিয়ার ব্যবসায়ীদের যেমন বিশেষ বিশেষ মৌসুম থাকে যখন খুব জমজমাট ব্যবসা হয় এবং বছরের অন্য সময়ের তুলনায় আয়-উপার্জন ও মুনাফা বেশি হয়, তেমনি আখেরাতের ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মৌসুম হচ্ছে রমজান মাস। এ মাসে আমলের সওয়াব বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। যেমন হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে রমজান মাসে একটি নফল আদায় করা অন্য মাসে একটি ফরজ আদায়ের সমান সওয়াব। আর রমজান মাসে একটি ফরজ আদায় করা অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায়ের সমান। রমজান মাসে উমরা পালন করা হজের সমতুল্য সওয়াব। সুবহানাল্লাহ।
এমনিভাবে যেকোন নেক আমল করলে অন্য মাসে দশটি নেকি হতো কিন্তু এ মাসে প্রতিটি নেক আমলের বিনিময়ে সত্তরটি এমনকি আমলের অবস্থাভেদে সাত শত ও সাত হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাই আসুন আমরা নামাজ-রোজা, তেলাওয়াতসহ সব ধরনের নেক আমল করে আখেরাতের পুঁজি অর্জনে ব্রতী হই। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন। (চলবে)