মুফতি আব্দুল হক আহমদী ::
(পূর্ব প্রকাশের পর)
পবিত্র কুরআন ও হাদিস শরীফে মাহে রমজানের অনেক গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্য থেকে প্রধান দশটি বৈশিষ্ট্য এখানে উল্লেখ করা হলো।
১. রমজান কুরআন নাযিলের মাস। আল্লাহ তায়ালা এ মাসে সম্পূর্ণ কোরআন শরীফ একত্রে লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে বাইতুল ইযযত নামক স্থানে অবতীর্ণ করেন। অতঃপর রাসুলে কারিম (সা.)-এর উপর সর্ব প্রথম এ মাসেই ওহী অবতীর্ণ হয়। এ বৈশিষ্ট্যের কথা কুরআন শরীফের সুরা বাকারার ১৮৫নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে। রমজান মাসের মর্যাদার জন্য এটাই যথেষ্ট যে এ মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে।
প্রসঙ্গত এখানে একটি প্রশ্ন হয় যে উপর্যুক্ত বিবরণ দ্বারা বোঝা যায় যে কুরআন শরীফ রমজান মাসে অবতীর্ণ হয়েছে। অথচ আমরা জানি কুরআন শরীফ ২৩ বছরে মহানবী (সা.) এর উপর ১ আয়াত ২ আয়াত করে ধীরে ধীরে নাজিল হয়েছে?
এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে এই যে, মাহে রমজানে একত্রে সম্পূর্ণ কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে প্রথম আসমানে। আর প্রথম আসমান থেকে ১ আয়াত ২ আয়াত করে ধীরে ধীরে ২৩ বছরে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে মহানবী (সা.) এর উপর দুনিয়াতে।
২. রমজান সকল আসমানী কিতাব নাজিলের মাস। আল্লাহ তায়ালা রমজান মাসেই সকল আসমানি কিতাব সমূহ নাজিল করেন। যেমন তৌরাত কিতাব হযরত মুসা (আ.) এর উপর রমজানের ছয় তারিখ, যবুর কিতাব হযরত দাউদ (আ.)-এর উপর রমজানের বারো কিংবা আঠারো তারিখ ইঞ্জিল কিতাব হযরত ঈসা (আ.) এর উপর রমজানের তের তারিখ এবং আসমানী অন্যান্য ছোট কিতাব সমূহ হযরত ইব্রাহীম (আ.) এর উপর রমজানের তিন তারিখ নাজিল করা হয়। এমনকি অন্যান্য সহীকাগুলোও রমজানের বিভিন্ন তারিখে বিভিন্ন নবীগণের উপর নাজিল করা হয়। এতেও প্রমাণ হয় রমজান মাস অন্যান্য সকল মাস হতে উত্তম।
৩. রমজানে জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়। মুমিন বান্দাগণ যাতে রমজানের সকল কল্যাণ লাভ করতে পারে এবং সকল নেক কাজে পূর্ণ উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে অংশগ্রহণ করে জান্নাতী শান্তি উপভোগ করতে পারে সে জন্য জান্নাতের দরজাসমূহ রমজানের প্রথম তারিখেই খুলে দেয়া হয়। যাঁরা প্রকৃত অর্থেই রোজা রাখে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, তারাবিহে নিয়মিত উপস্থিত হয় এবং কুরআন তেলাওয়াতসহ অন্যান্য এবাদত নিষ্ঠার সাথে আদায় করে তাঁরাই কেবল জান্নাতের সেই অমিয় স্বাদ দুনিয়াতে গ্রহণ করে। (চলবে)