দেশের সাধারণ মানুষের জন্য চিকিৎসাসেবা মৌলিক অধিকার হলেও অধিকাংশ মানুষ এখনো এ সেবা থেকে বঞ্চিত। প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবের কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। গতকাল দৈনিক সুনামকণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় যায়Ñ সুনামগঞ্জে উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের মঞ্জুরিকৃত ৯৫টি পদ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে ৬১টি পদ। সুনামগঞ্জ জেলায় কাগজে-কলমে দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র ৩৪ জন। তিন বছরের ডিএমএফ ডিগ্রিধারী এই উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা তৃণমূলের মানুষের সাধারণ স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা থাকলেও তাদের কাজ কি সাধারণ মানুষ জানেনা। তাদের কর্ম এলাকায়ও সচরাচর দেখা যায় না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুযায়ী, উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা তৃণমূলে থেকে সাধারণ মানুষকে প্রাথমিক সেবা দেওয়ার কথা। তাদের সঠিক রোগ নির্ণয় করতে না পারলে পোস্ট গ্রাজুয়েট বা মাস্টার্স ডিগ্রিধারী চিকিৎসককে রেফার করতে বাধ্য। কিন্তু তৃণমূলে না থেকে উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেই প্রেষণে দায়িত্ব পালন করার ফলে তৃণমূলের মানুষ প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া দেশের ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকল মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। স্বাধীনতার চার দশক পরও সেই মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের চিত্র দেখে আমাদের হতাশই হতে হচ্ছে। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার কথা না হয় বাদই দিলাম, গরিবের অর্থে পরিচালিত সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় গরিব কেন এভাবে উপেক্ষিত হবে? আমরা চাই, সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য পর্যাপ্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। মনে রাখতে হবেÑ স্বাস্থ্যসেবার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত নিয়ে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। দেশের তৃণমূলের মানুষের এ মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা একটি গণতান্ত্রিক সরকারের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। সত্যি যদি স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হয়, তবে জরুরিভিত্তিতে জনবল সংকট দূরীকরণে সচেষ্ট না হয়ে কোনো উপায় নেই। ‘যে কোনোভাবেই হোক’ সুনামগঞ্জ জেলার এ সংকটের অবসান ঘটাতে হবে।