একটি দেশের উন্নতি ও অগ্রগতিতে সবচেয়ে বড় তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখে সেই দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা। তার মানে যে দেশ যত উন্নত, তার যোগাযোগ ব্যবস্থাও তত উন্নত। এদিক দিয়ে বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কত পেছনে পড়ে আছে, তার পরিসংখ্যান দেয়া কঠিন।
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠ পত্রিকার একটি সংবাদ থেকে জানা যায়Ñ সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রতিদিন অনন্ত সহ¯্রাধিক যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, লরি এ অঞ্চল থেকে সিলেট-ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে মালামাল নিয়ে চলাচল করে। কিন্তু বর্তমানে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের দু’পাশের মাটি সরে যাওয়ার ফলে এ সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। দ.সুনামগঞ্জ উপজেলাধীন, সুনামগঞ্জ সদর ও ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ এলাকা থেকে নীলপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশে বিটুমিনের তৈরি রাস্তা ছিল। কিন্তু মূল সড়ক থেকে মাটির অংশ এক থেকে দেড় ফুট, দুই ফুট এবং কোনো কোনো জায়গায় তিন ফুট নিচু হওয়ায় অনেক জায়গায় রাস্তাটির প্রশস্ততা কমে গেছে। অনেক স্থানে আবার দু’পাশে মাটি ভেঙে যাওয়ার ফলে মূল সড়ক থেকে মাটির অংশ নিচু হওয়ায় বাস, ট্রাক, লরি, সাইকেল, মোটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহনের চালকেরা দ্রুতগতির বাস ও ট্রাককে সাইড দিতে গিয়ে নিচু জায়গায় যানবাহন পড়ে উল্টে গিয়ে চলতি বছর গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্ট এলাকা থেকে নীলপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার রাস্তায় দুর্ঘটনায় অন্তত দশজন নিহত হয়েছেন। এ সব দুর্ঘটনা সাধারণ মানুষকে ক্রমেই ভাবিয়ে তুলছে। তবে অবস্থা চলতে দেয়া যাবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে নিরাপদ সড়ক।
যে কোনো দেশের উন্নয়ন-সমৃদ্ধির জন্য উন্নত আধুনিক সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচিত। যেসব দেশ উন্নয়নের শিখরে অবস্থান করছে তারা সবাই সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রথমেই মনোযোগী হয়েছে। তারা এই সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বাস্তবতার নিরিখে উন্নয়ন সাধন করেছে। এই উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা তাদের জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে সহজ ও মসৃণ করেছে, দ্রুতায়িত করেছে। এই বিবেচনায় আমরা মনে করিÑ বাংলাদেশের অগ্রগতিতে মানস¤পন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার ভূমিকা ও গুরুত্ব অনস্বীকার্য। বিনিয়োগ, শিল্পায়ন, পণ্য পরিবহনের জন্য সড়কথের সুবিধা নিশ্চিত ও বিস্তৃত করার কোনো বিকল্প নেই।