মুফতি আব্দুল হক আহমদী::
মাহে রমজান আল্লাহতায়ালার অনেক বড় নেয়ামত। এই মাসের দিবস-রজনীকে আল্লাহ তায়ালা খায়ের ও বরকত দ্বারা পরিপূর্ণ করে রেখেছেন। তাকওয়া অর্জনের অনুশীলনের জন্য এবং ইবাদত বন্দেগী ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ হল মাহে রমজান। গোটা বছরের ঈমানী প্রস্তুতি এ মাস থেকেই গ্রহণ করা হয়। হাদিস শরিফের ভাষায়- ‘আল্লাহ তায়ালার কসম! মুসলমানদের জন্য এর চেয়ে উত্তম মাস আর নেই এবং মুনাফিকদের জন্য এর চেয়ে ক্ষতির মাস আর নেই।’
সত্যিকারের মুসলমানগণ এ মাসে গোটা বছরের জন্য ইবাদতের শক্তি ও পাথেয় সঞ্চয় করেন। আল্লাহতালায়া এ মাসে সৃষ্টি জগতে এমন অনেক অবস্থা ও পরিবর্তনের সূচনা করেন, যা গোটা পরিবেশকেই রহমত ও বরকতময় করে দেয়। এ মাসে আল্লাহর হুকুমে জান্নাতের সকল দরজা সমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। বড় বড় জ্বিন ও শয়তানকে বন্দি করা হয়। রমজানের প্রথম রাত্র থেকেই একজন ঘোষক আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা করতে থাকেন- ‘হে কল্যাণ অন্বেষী অগ্রসর হও, হে অকল্যাণকামী থেমে যাও।’
আসমানী এ আহ্বানের প্রভাবে একদল সৌভাগ্যশালী হিম্মতের সাথে আমলের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অত্যন্ত কষ্ট স্বীকার করে রোজা রাখেন, খতমে তারাবির নামাজে নিয়মিত হাজির হন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করেন, সেহরি-ইফতারির পাবন্দি করেন, কুরআন তেলাওয়াত করেন, গরিব মিসকিনকে সাহায্য করেন এবং অন্যান্য সকল ইবাদতবন্দেগিতে আত্মনিয়োগ করেন। ফলে রমজানের প্রকৃত স্বাদ অনুভবের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সক্ষম হন। এমনকি হাদিসের ভাষায় এসব লোকেরা স্বীয় গুনাহসমূহ থেকে এমনভাবে নিষ্পাপ হয়ে যায় যেমনভাবে কোন শিশু সন্তান যে সদ্য তার মায়ের পেট থেকে নিষ্পাপ অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। অন্য হাদিসে আছে- যে ব্যক্তি ঈমান ও একিনের সাথে রমজানে রোজা রাখবে এবং তারাবির নামাজ আদায় করবে তাঁর জীবনের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ। আল্লাহ সকলকে আমলের তৌফিক দান করুন। আমিন।