একটি রাষ্ট্রের উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি হলো শিক্ষার উন্নয়ন। জাতিকে উন্নত করতে হলে শিক্ষার উন্নয়নে বিশেষ নজর রাখতে হয়। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বর্তমান সরকার দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর সর্বাত্মক চেষ্টায় অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। ২০১০ সালে শিক্ষানীতি প্রণয়ন এবং পরবর্তী সময়ে শিক্ষানীতির আলোকে শিক্ষা আইন প্রণয়নের আন্তরিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। নানাবিধ প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে হলেও বাংলাদেশে এরই মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ নীতিগত অনেক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। কিন্তু শিক্ষায় নানা ধরনের উন্নয়ন ঘটলেও কিছু ক্ষেত্রে প্রায়ই আপত্তি-বিপত্তি লক্ষ করা যাচ্ছে।
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের প্রকাশিত একটি সংবাদ থেকে জানা যায়Ñ তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের গোপীনাথ নওয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সোমবার মডেল টেস্ট ও বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান বন্ধ রেখে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনে প্রধান শিক্ষক ভুবন মোহন সরকার অভিভাবকদের সঙ্গে সভা করেন। এ সময় আলোচনায় উপস্থিত থাকা ছাত্র অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষককে পরীক্ষা চলাকালীন কেন মিটিং ডাকা হল এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলে মিটিং বর্জন করে প্রধান শিক্ষকের এমন কাজে নিন্দা জানান। সংবাদে প্রধান শিক্ষক ভুবন মোহন সরকার ‘এটা মডেল টেস্ট পরীক্ষা ছিল তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়’ এমন বক্তব্য প্রদান করেন। প্রধান শিক্ষকের এমন বক্তব্য কখনোই কাম্য নয়।
শিক্ষক হবেন পরিচ্ছন্ন মনের, তিনি শিক্ষাদান করবেন নিজেকে উজাড় করে দিয়ে। শিক্ষক হতে হলে যেসব বৈশিষ্ট্য অপরিহার্য তার মধ্যে প্রথম ও প্রধান হলো পাঠদানের বিষয়ে সম্যক জ্ঞান ও সততা। মনুষ্যত্বের মানদ-ের মধ্যে যেমন সততার বিকল্প নেই, তেমনি শিক্ষকতায় নির্ভেজাল জ্ঞান ও সততার অভাব থাকলে তাঁকে আর যাই হোক শিক্ষক ভাবা সমীচীন নয়। যার কাছ থেকে শিক্ষার্থী জ্ঞান আহরণ করবে, তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও অবিচল বিশ্বাস থাকতে হবে। বিশ্বাস শ্রদ্ধা-ভালোবাসার পূর্বশর্ত। বিশ্বাস না থাকলে ভালোবাসা যায় না কিংবা শ্রদ্ধা প্রদর্শনও কঠিন। অবশ্য এ জন্য শিক্ষক শ্রদ্ধাপ্রাপ্তির উপযুক্ত হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবেন। মনে রাখতে হবেÑ আজকের শিক্ষার্থীরা দেশ-সমাজ ও পারিপার্শ্বিক স¤পর্কে ভাববে না তা নয়, সবার আগে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। বিদ্যালয়ে পাঠের সময় সভা-সমাবেশ বন্ধ রাখতে হবে।