বিশেষ প্রতিনিধি ::
পঁচাত্তরের রাজনৈতিক সংকট এবং ওয়ান ইলেভেন রাজনৈতিক সংকটে যাঁরা আওয়ামী লীগ তথা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে লড়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আসন্ন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাঁদের বিশেষ বিবেচনা করা হবে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আদর্শের উত্তরাধিকারী, ত্যাগী, সৎ, নির্লোভ এবং নিবেদিতপ্রাণ তরুণ এবং প্রবীণদের সমন্বয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া স্থানীয় ৫ সাংসদের মতামতকেও কমিটি গঠনে গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা সেক্রেটারি। জাতীয় কাউন্সিলের আগেই পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি ঘোষণা হবে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের তৎপরতা থমকে ছিল। নির্বাচন শেষ হওয়ার পরই ফের তৎপরতা শুরু হয়। কমিটিতে স্থান পেতে দেশ-বিদেশ থেকে তৎপরতা চালাচ্ছেন অনেকে। তবে ওই সূত্র জানিয়েছে, যারা পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে এবং ওয়ান ইলেভেনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বেঈমানি করেছে তাদের কাউকে স্থান দেওয়া হবে না। বরং ওই সময়ে যারা বুক চিতিয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে জীবনবাজি রেখে লড়েছেন তাঁদেরকে মূল্যায়ন করা হবে। এর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের উন্নয়ন দর্শন, রাজনৈতিক আদর্শকে এগিয়ে নিতে তরুণদের নিয়ে প্রবীণদের সমন্বয়ে ওই কমিটিতে ত্যাগী, নিবেদিতপ্রাণ, সৎ, নির্লোভ নেতাকর্মীদের স্থান দেওয়া হবে। যাঁরা দীর্ঘ দেড়যুগ কমিটি না হওয়ায় নেতৃত্ব পাননি সেইসব সম্ভাবনাময় নেতাদেরও স্থান দেওয়া হবে। জামায়াত, বিএনপিসহ দেশ-বিদেশের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রাজপথে সোচ্চার থাকে এমন একটি কমিটি উপহার দেওয়া হবে শেখ হাসিনাকে। যারা তার উন্নয়ন দর্শন, স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষাকে জীবনবাজি রেখে এগিয়ে নিয়ে যাবে। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেনা এমন কাউকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হবেনা বলে সংশ্লিষ্টরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
জানা গেছে, উক্ত আদর্শের নেতাকর্মীদের তালিকা প্রস্তুত করার তৎপরতা চলছে। পঁচাত্তর পরবর্তী যেসব পরিবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার বিরুদ্ধে রাজপথে সোচ্চার ছিল, জেল-জুলুম খেটেছে সেই পরিবারের সন্তানদের ডেকে এনে সক্রিয় করা হচ্ছে। তাঁদের অনেককেই এখন ঘরোয়াভাবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে। একইভাবে যাঁরা ওয়ান ইলেভেনে মাইনাস টু ফর্মুলার বিরুদ্ধে অবস্থান করে শেখ হাসিনার পক্ষে রাজপথে লড়েছেন তাদেরও সক্রিয় করা হচ্ছে। দলের দুঃসময়ের এই রাজনৈতিক কর্মীদের কমিটিতে মূল্যায়ন করার ইঙ্গিত দিয়েছে একাধিক সূত্র।
ওই সূত্র আরো জানায়, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন ঐক্যবদ্ধ হয়ে চূড়ান্ত কমিটির নেতাদের নাম প্রস্তুত করছেন। বিভিন্ন ইস্যুতে দুই নেতা অনেক বিষয়ে ছাড় দিয়েও একটি গ্রহণযোগ্য ও মেধাদীপ্ত কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর যারা ভয় না পেয়ে দলের হাল ধরে নির্যাতিত হয়েছিলেন সেসব নেতা এবং তাদের সন্তানদের মূল্যায়ন করা হবে। একইভাবে ওয়ান ইলেভেনে যাঁরা জননেত্রীর জন্য রাজপথে ছিলেন সেসব নেতাকর্মীদেরও মূল্যায়ন করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঋদ্ধ নবীন-প্রবীণ, সৎ, মেধাবী এবং দলের আদর্শের প্রতি অবিচল এমন কর্মীদের নিয়েই কমিটি গঠনের প্রস্তুতি চলছে। আগামী জাতীয় কাউন্সিলের আগেই কমিটি প্রকাশ করা হবে বলে তিনি জানান।