ধূমপান বিষপান এটি জানার পরেও সচেতন অনেকেই এই বিষপান থেকে কোনভাবেই বেরিয়ে আসতে না পারায় বাংলাদেশে অকাল মৃত্যু এবং বিভিন্ন রোগের মাত্রা বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন জরিপে প্রকাশ, দরিদ্র, অশিক্ষিত এবং নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে ধূমপান ও তামাক দ্রব্য ব্যবহারের প্রবণতা অনেক বেশি। বিশ্বের মোট ধূমপায়ীদের ৮০ ভাগের মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশে বাস করে। বিশ্বব্যাপী তামাক ব্যবহারের মাত্রা এভাবে বাড়তে থাকলে ২০৩০ সাল নাগাদ ধূমপানই মানুষের মৃত্যুর একমাত্র কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
বিশ্বের যে ১০টি দেশে দুই তৃতীয়াংশ ধূমপায়ীরা বাস করে বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। দেশে ধূমপান ও তামাক দ্রব্য ব্যবহারের কারণে ক্যান্সার, হার্ট এ্যাটাক, ব্রেইন স্ট্রোক, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি জীবনঘাতি রোগের মাত্রা বেড়েই চলেছে। এসব কারণে প্রতিবছর ৫৭ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, আর বিভিন্ন রোগে অসুস্থ হচ্ছে ১২ লক্ষেরও বেশি মানুষ।
বাংলাদেশ সংসদে ‘ধূমপান ও তামাকজাতদ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ বিল’ পাস হলেও বেশির ভাগ মানুষই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন স¤পর্কে সচেতন নয়। এই আইনে নির্দিষ্ট কিছু উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ এবং জরিমানার বিধান থাকলেও সর্বত্রই ধূমপানের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। তাই তামাক ও ধূমপান নিরসনে প্রয়োজন আরও দীর্ঘমেয়াদী ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগ। ধূমপান ও তামাকের ব্যবহার একপ্রকার আসক্তি যা নির্মূলে খুঁজে বের করা দরকার কোন বিষয়গুলো ধূমপানের প্রবণতাকে প্রভাবিত করে। আমরা মনে করিÑ ধূমপান ও তামাক নিরসনে তামাক ব্যবহারের ক্ষতিকর স¤পর্কে গণমাধ্যমে প্রচারণা চালানো, স্কুলের স্বাস্থ্য শিক্ষা পাঠ্যসূচিতে ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা, তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের উপর অতিরিক্ত করারোপ করা, প্রযুক্তির বিভিন্ন মাধ্যমে ধূমপান ও তামাক বিরোধী ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করা, আইনের সঠিক প্রয়োগ করা ইত্যাদি উদ্যোগকে চলমান রাখতে হবে। পাশাপাশি এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনও জোরদার করতে হবে।