সুনামগঞ্জে কর্মরত সহকারি কাস্টমস কমিশনারের অর্থদুর্নীতির ঘটনা এখন জেলার সর্বত্র আলোচনার বিষয়। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
জানা গেছে, রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছেন সুনামগঞ্জের সহকারি কাস্টমস কমিশনার শরিফ মো. আল আমিন। বর্তমানে সুনামগঞ্জের কাস্টমস এন্ড এক্সাইজ ভ্যাট কার্যালয়ের কর্মরত এ কর্মকর্তার বিভিন্ন নামে-বেনামে ব্যাংক হিসাবে মাত্র ১৯ দিনে ৬ কোটি ২৬ লাখ ১১ হাজার ২২২ টাকা জমা হয়েছে। এসব টাকার বৈধ কোনো উৎস খুঁজে না পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে এ মামলার অনুমোদন দেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। শিগগিরই শরিফ মো. আল আমিনের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
আসামি কাস্টমসের সহকারী কমিশনার শরীফ মো. আল আমিন ৩১তম বিসিএস (কাস্টমস) এর একজন কর্মকর্তা। তিনি ৩১তম বিসিএস (কাস্টমস) ক্যাডারে সহকারি কমিশনার পদে গত ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি যোগদান করেন।
একজন নবীন কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও সোনালী ব্যাংক লি. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর নিজ নামে একটি ৮০ লাখ টাকার এফডিআর করেন তিনি। এরপর একই বছরের নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ ও ১৬ তারিখে তার মা শরীফ হাসিনা আজিম ও তার বোন শরীফা খানমের নামে ৭৫ লাখ টাকা করে ২টি এফডিআর করেন। এসব এফডিআরে শতভাগ নমিনি কাস্টমসের সহকারি কমিশনার নিজেকে রেখেছেন।
দুদক সূত্রে আরো জানা গেছে, শরীফ মো. আল-আমীন অবৈধ উপায়ে দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে অর্জিত মোট ৬ কোটি ২৬ লাখ ১১ হাজার ২২২ টাকা তার নিজের ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। জমা করা অর্থের মধ্যে তিনি ৪ কোটি ১২ লাখ ৫১ হাজার টাকা নগদ তুলে নেন।
এরপর বিষয়টি দুদকের অনুসন্ধানে চলে এলে বাকি ১ কোটি ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৭ টাকা আর তুলতে পারেননি। দুদকের নির্দেশে এ টাকা ফ্রিজ করে রেখেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
দুদকের অনুসন্ধানে আরো বেরিয়ে আসে, শরীফ মো. আল-আমিন পরিবারের জন্য ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকায় গাড়ি কিনেন। এ কর্মে শরীফ মো. আল-আমিনকে সহযোগিতা করায় তার মা, বোনসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়।
আমরা জানি, শক্তির অপব্যবহার এবং অপরাধের শিকড় হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতির কারণে বাড়ছে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। আর এ কারণেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক সংস্কৃতি গড়ে ওঠছে না। এ অবস্থা চলতে পারে না। দুর্নীতিবাজ যেই হোক তাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া যাবে না। দুর্নীতিবাজকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।