নানা সমস্যায় জর্জরিত সুনামগঞ্জের বিসিক শিল্পনগরী। ব্যবসায়ী পণ্যের আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির এবং সুনামগঞ্জের ব্যবসার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে শহরের মল্লিকপুরে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু যে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে বিসিক শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, সেই আশানুরূপ সফলতা আসেনি বিসিক শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠানের এবং উদ্যোক্তাদের। শিল্পনগরীতে বিরাজিত নানা সমস্যা এখন অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুনামগঞ্জে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরীতে এখনও প্লট বরাদ্দ দেয়া শেষ হয়নি। বিসিক শিল্পনগরীতে মোট ১১৬টি প্লট রয়েছে। এর মধ্যে ৪৫জন উদ্যোক্তাকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ৮৪টি প্লট। চালু রয়েছে ২০টি ইউনিট। বরাদ্দের অপেক্ষায় আছে আরও ৩২টি প্লট। বার বার বিজ্ঞপ্তি দিলেও প্লট বরাদ্দ নিতে আগ্রহী হচ্ছেন না উদ্যোক্তারা। গ্যাস, রাস্তা-ঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নানা সমস্যা বিরাজ করায় বিগত ১০ বছরেও শিল্পনগরীতে লাগেনি শিল্পের ছোঁয়া।
২০০৬ সাল থেকে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরীতে মোট জায়গা ১৬ দশমিক ১৫ একর ভূমি থেকে প্লট বরাদ্দ দেয়া শুরু হয়। প্লটের প্রতি শতক কিস্তি মূল্য ৬৬ হাজার ৯৯ টাকা হারে এবং নগদ মূল্যে প্রতি শতক ৫১ হাজার ৪০ টাকা হারে বরাদ্দ দেয়া শুরু হয়। দীর্ঘ ১০ বছরে মাত্র ৮৪টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত প্লটে গড়ে উঠেছে গার্মেন্টস, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ, কটন ইন্ডাস্ট্রি, কয়েল ইন্ডাস্ট্রি, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি, ফার্নিচার, প্লাস্টিক কাটার মিল, চিড়া-মুড়ির মিল, ময়দার মিল ইত্যাদি। এছাড়াও নির্মাণ করা হয়েছে প্রশাসনিক ভবন, পাম্প কোয়ার্টার এবং মসজিদ।
ইতোমধ্যে যারা এসব মিল বা ফ্যাক্টরি গড়ে তোলেছেন তাদের ব্যবসা জমে উঠেনি এখনও। রয়েছে রাস্তা-ঘাটের সমস্যা, গ্যাস সংযোগ না দেয়ার সমস্যা। ছিঁড়ে যাওয়া টেলিফোন লাইন ভাল ক্যাবল দিয়ে মেরামত না করার সমস্যা। বিসিকের প্লট বরাদ্দে যেমন রয়েছে নানা সমস্যা, তেমনি রয়েছে উদ্যোক্তাদের নানা অভিযোগ। বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় বিদ্যুতের সমস্যা রয়েছে। সমস্যা রয়েছে ড্রেনেজ ব্যবস্থার, আছে রাস্তা-ঘাটের নানা সমস্যা। বিসিক এলাকায় সড়ক বাতি নেই। ফলে রাতের বেলা ভূতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়। টেলিফোন পয়েন্ট বক্স নেই। শিল্পনগরীর ভেতরে ও বাইরে সংযোগ সড়ক অবহেলিত।
২০১০ সালে ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গ্যাস সংযোগ দেয়া শুরু হয়েছিল। হঠাৎ সরকারিভাবে গ্যাস সংযোগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এ নিষেধাজ্ঞায় প্লট বরাদ্দে বিপাকে পড়েন বিসিক কর্মকর্তারা। ব্যবসায়ী পণ্যের আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি এবং সুনামগঞ্জের ব্যবসার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বিসিক শিল্পনগরীর সকল সমস্যা দূর করে প্লট বরাদ্দের ব্যবস্থা করা জরুরি। আমরা আশা করবো এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ উদ্যোগ নিবেন।