সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বিশেষজ্ঞ কমিটির মূল্যায়নে ‘মানস¤পন্ন ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ’ ২০ কো¤পানিকে সাত দিনের মধ্যে সব ধরনের ওষুধ উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। সেইসঙ্গে আরও ১৪টি কো¤পানিকে একই সময়ের মধ্যে এন্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসনের পরিচালকসহ চারজনকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ এই আদেশ দেয়।
বিশেষজ্ঞ কমিটির মূল্যায়নে ‘মানস¤পন্ন ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ’ এসব কো¤পানির লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ গত মে মাসে হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করের। রিটকারীদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শশাঙ্ক শেখর সরকার।
ওই ৩৪টি কো¤পানির অনুমোদন বাতিলে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং এসব কো¤পানির লাইসেন্স ও এন্টিবায়োটিক উৎপাদনের অনুমোদন কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সক্রেটারি জেনারেল ও র্যাব মহাপরিচালকসহ সাতজনকে চার সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
যে ২০ কো¤পানিকে সব ধরনের ওষুধ উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছেÑ
এক্সিম ফার্মাসিউটিক্যাল, এভার্ট ফার্মা লিমিটেড, বিকল্প ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ডলফিন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ড্রাগল্যান্ড লিমিটেড, গ্লোব ল্যাবরেটরিজ (প্রাইভেট) লিমিটেড, জলপা ল্যাবরেটরিজস লিমিটেড, কাফমা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, মেডিকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ন্যাশনাল ড্রাগ ফার্মা লিমিটেড, নর্থ বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, রিমো কেমিক্যালস লিমিটেড (ফার্মা ডিভিশন), রিড ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, স্কাইল্যাব ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ¯পার্ক ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, স্টার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, সুনিপুণ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, টুডে ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ট্রপিক্যাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং ইউনিভার্সেল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
যে ১৪ কো¤পানিকে এন্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে-
আদ-দ্বীন ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড , আলকাদ ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, বেলসেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, বেঙ্গল ড্রাগস অ্যান্ড কেমিক্যালস (ফার্মা) লিমিটেড, ব্রিস্টল ফার্মা লিমিটেড, ক্রিস্ট্যাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, মিল্লাত ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, এমএসটি ফার্মা অ্যান্ড হেলকেয়ার লিমিটেড, অরবিট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ফার্মিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, পনিক্স কেমিক্যাল ল্যাবরেটরি লিমিটেড, রাসা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও সেভ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
২০১৪ সালের ২০ সেপ্টম্বর ভেজাল এবং নি¤œমানের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় স¤পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে।
বিশেষজ্ঞ কমিটি দেশের ৮৪টি ওষুধ কো¤পানি পরিদর্শন করে সেগুলোর সক্ষমতা মূল্যায়নের পর চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সংসদীয় কমিটিতে প্রতিবেদন জমা দেয়।
প্রতিবেদনে মানস¤পন্ন ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ ২০টি কো¤পানির লাইসেন্স বাতিল এবং ১৪ কো¤পানির সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক (নন-পেনিসিলিন, পেনিসিলিন ও সেফালো¯েপারিন গ্রুপ) ওষুধ উৎপাদনের অনুমতি বাতিলের সুপারিশ করা হয়।
এ বিষয়ে ‘জীবন রক্ষাকারী ওষুধে ভেজাল’ শিরোনামে ১৯ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষেশজ্ঞ কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয় বলে মনজিল মোরসেদ জানান।