মাও. কাজী মো.শাহেদ আলী
পবিত্র রমজানুল মোবারক হিজরি সনের নবম মাস। ১৪৩৭ হিজরির রমজান মাসকে জানাই সুস্বাগতম। আরবিতে শাহরুন শব্দের অর্থ মাস, আর রামাজান শব্দটি রামজুন শব্দ হতে আগত। এর অর্থ- পুড়িয়ে ফেলা, ছাই হওয়া, পাপ মুক্তি, কুপ্রবৃত্তিকে ধ্বংস করে দেওয়া। রোজা পালন করলে আল্লাহতায়ালার রহমত নাজিল হয়। গোনাহ মাফ হয়, গোনাহকে জ্বালিয়ে ছাই করে দেয় বলেই এ মাসকে রামাজান মাস হিসাবে নামকরণ করা হয়েছে।
আল্লাহপাক পবিত্র কোরআন শরিফে এরশাদ করেছেন যে, হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীগণের উপরও ফরজ করা হয়েছিল। যাতে করে তোমরা মোত্তাকি হতে পার।
রোজাকে আরবি ভাষায় ছওম বলা হয়। বহুবচনে ছিয়াম, যার অর্থ বিরত থাকা। ইসলামি পরিভাষায় ছোবহে ছাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, স্ত্রী সহবাস ও অন্যান্য ইন্দ্রিয়সমূহকে সমস্ত অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখার নাম রোজা।
মাহে রমজানের মধ্যে সকল মুমিনগণের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে আল্লাহপাক এরশাদ করেন- অর্থাৎ তোমাদের যে কেহ এ মাসকে পাবে, সে যেন এ মাসে রোজা পালন করে রোজা রাখার প্রতি উৎসাহিত করে। আল্লাহপাক তার বেলায় হাদিসে কুদসিতে এরশাদ করেন, আচ্ছাউমো লী ওয়াআনা আজ্জীবিহী। অর্থাৎ রোজা একমাত্র আমার জন্য রাখা হয়। তাই আমি নিজ হাতেই রোজার প্রতিদান করবো। অতএব রমজান শরীফের রোজা পালনের মাধ্যমে সিয়াম সাধনা করে আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়াই একান্ত অত্যাবশ্যক। প্রিয় নবী হুজুর পাক (সা.) এরশাদ ফরমাইয়াছেন, পবিত্র রমজান মাসকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম দশ দিন রহমত, দ্বিতীয় দশদিন মাগফিরাত ও শেষ দশদিন নাজাতের। আরো বর্ণিত আছে যে, যখন রমজান মাস আরম্ভ হয় তখন হতে ঊর্ধ্ব জগতের (তথা রহমতের) সকল দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। বেহেস্তের দরজা খোলা ও দোজখের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে রাখা হয়। আল্লাহপাক আমাদিগকে পবিত্র রমজান মাসে সকল মুমিন, আকেল, বালেগদিগকে রোজা রেখে চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক, মন ও পেট প্রভৃতির দ্বারা আত্মশুদ্ধি হওয়ার এবং তার পূর্ণ ফজিলত ও রহমত-বরকত হাছিল করার তৌফিক দান করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।
[মাওলানা কাজী মো. শাহেদ আলী, সুপার (স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত), ইয়াকুবিয়া দাখিল মাদ্রাসা, মঙ্গলকাটা]