বিশেষ প্রতিনিধি ::
স্থানীয় সরকারের নির্বাচনী উৎসবের দামামা বাদ্য শেষ হয়েছে ৪৮ ঘণ্টা আগেই। জয়-পরাজয়ের হিসেব কষতে শুরু করেছেন নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা। দলীয় প্রতীকে প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আজকেই শেষ হলেও জয়-পরাজয়ের রেশ রয়ে যাবে কিছুদিন। তবে শেষ দফা নির্বাচনে সুনামগঞ্জের ৫৬ বিদ্রোহী নিয়ে টেনশনে রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর এবং ধর্মপাশায় বিদ্রোহীদের জয়ের পাল্লা ভারী। ‘মনোনয়ন বাণিজ্যে’র কারণে জনপ্রিয় প্রার্থীদের বাদ দেওয়ায় আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হবে বলে দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তবে বিদ্রোহী প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন দলীয় প্রভাবে কিছু কিছু কেন্দ্র দখল করে জয় ছিনিয়ে নিতে পারেন দলীয় প্রার্থীরা।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের ৭জন এবং বিএনপির ১জন বিদ্রোহী রয়েছেন। ফতেপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ৪জন বিদ্রোহী, পলাশ ইউনিয়নে ১জন, সলুকাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র একজন করে বিদ্রোহী, ধনপুরে আওয়ামী লীগের ১জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। এ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়নেই বিদ্রোহী প্রার্থীরা শক্তিশালী বলে জানা গেছে।
তাহিরপুর উপজেলার ৭ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ৮ এবং বিএনপি’র ৫জন বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। তাহিরপুরের বাদাঘাট, উত্তর বড়দল, বালিজুড়ি এবং সদর ইউনিয়নে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এ উপজেলার বিএনপি’র ৫জন বিদ্রোহী প্রার্থীর অবস্থাও ভালো।
ধর্মপাশা উপজেলার ১০ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ১৯ এবং বিএনপির ৬জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। এ উপজেলার বেশির ইউনিয়নেই বিদ্রোহী প্রার্থীদের অবস্থা ভালো। বিএনপি’র ৫ বিদ্রোহীও সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন।
জামালগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ৭জন এবং বিএনপি’র ১জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। ফেনারবাক ইউনিয়নে ৩জন, বেহেলি ইউনিয়নে ৩জন এবং সাচনাবাজার ইউনিয়নে ১জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। ভিমখালি ইউনিয়নে বিএনপি’র ১জন বিদ্রোহী প্রার্থী শক্ত অবস্থানে আছেন।
জানা গেছে, সাচনাবাজার উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর দুর্বল অবস্থানের কারণে ক্ষমতাসীন দলের একটি সিন্ডিকেট তিনটি কেন্দ্র দখলের চিন্তা-ভাবনা করছে। আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা এর আগে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী মতিউর রহমানের উপরও হামলা করেছে। এ নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী ও দলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা মুখোমুখি রয়েছেন।
ফেনারবাক ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থী মতিউর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমাদের ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্র দখল করার হুমকি দিচ্ছে। ভোট ডাকাতির চেষ্টা হলে জনগণ প্রতিরোধ করবে বলে তিনি জানান।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক রয়েছে। কাউকেই ভোটকেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা দিতে দেওয়া হবে না।