স্টাফ রিপোর্টার ::
রমজান মাসে বিনাবেতনে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ ও ২০ রমজানের মধ্যে ঈদ উৎসব বোনাস প্রদানের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারি শ্রমিক ইউনিয়ন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শহরে মিছিল পরবর্তী সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। এছাড়া সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপিও প্রদান করেছেন নেতৃবৃন্দ।
ওইদিন বিকেল ৫টায় জামাইপাড়াস্থ সংগঠনের কার্যালয় থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে আলফাত স্কয়ারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জেলা সহ-সভাপতি প্রদীপ বিশ্বাস। এ সময় বক্তব্য রাখেন হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট জেলা শাখার সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম, জেলা ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের বাদল সরকার, হোটেল মিষ্টি বেকারি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়া, হোটেল শ্রমিক নেতা সেনবাবু, মোহিত মিয়া, নিমাই দাস, এমদাদুল হক ও ইকবাল হোসেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, রমজান মাস সিয়াম সাধনার বার্তা নিয়ে আসলেও অধিকাংশ হোটেল শ্রমিকদের জন্য অজানা আশঙ্কা নিয়ে আসে। কারণ দীর্ঘ ১১ মাস চাকরি করার পর রমজান মাস আসলে ‘ব্যবসায়ী মান্দা’র অজুহাত দেখিয়ে অধিকাংশ মালিকরা হোটেল শ্রমিকদের বিনাবেতনে ছাঁটাই করে দেন। ফলে পবিত্র এই মাসে ছাঁটাইকৃত হোটেল শ্রমিকদের জীবনে নেমে আসে চরম অনিশ্চয়তা। পরিবার-পরিজন নিয়ে শ্রমিকরা সিয়াম সাধনার পরিবর্তে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হন। এমনকি শ্রমিকরা ঈদের আনন্দ উদ্যাপন থেকেও বঞ্চিত হন। অথচ শ্রমিকদের হাড়ভাঙা পরিশ্রমে মালিকদের পুঁজি আরাম-আয়েশ বৃদ্ধি হয় আর শ্রমিকদের সৃষ্ট মুনাফায় মালিকপক্ষ মহাধুমধাপে ঈদ উদ্যাপন করেন। ঈদের সময় হোটেল শ্রমিকরা কোনো উৎসব ভাতা পান না। ২০০৯ সালের ২৪ নভেম্বর সরকার হোটেল শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরির গেজেট প্রকাশ করেন, ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী প্রত্যেক শ্রমিককে এক মাসের বেতনের সমপরিমাণ বছরে দুটি উৎসব বোনাস প্রদানের আইন করা হয়। এরপর ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল সরকার ঘোষিত গেজেট ও শ্রম আইন বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেঁস্তরা মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের মধ্যে লিখিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। অথচ হোটেল মালিকরা সরকারি আইন ও চুক্তি লঙ্ঘন করে সম্পূর্ণ বেআইনভাবে এই সকল কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। হোটেল শ্রমিকরা দৈনিক ১০-১২ ঘণ্টা অমানবিক পরিশ্রম করে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন, যার কারণে হোটেল শ্রমিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।