আর কিছুদিন পরই পবিত্র ঈদুল ফিতর। কিন্তু এবার সুনামগঞ্জ জেলার ফসলহারা কৃষকদের আড়ম্বরপূর্ণভাবে ঈদ উদ্যাপন করা হবে না। ফসল হারিয়ে তারা নিঃস্ব। যেখানে দু’বেলা খাবারই জোটানো যাচ্ছে না, সেখানে জাঁকজমক ঈদ উদ্যাপন তো কল্পনাতীত।
এবার ফসলহানির প্রভাব পড়েছে ঈদ বাজারে। বেচাকেনা না থাকায় ব্যবসায়ীরাও হতাশ। কিন্তু এমনটি হবার কথা ছিল না। বাঁধ ভেঙে ফসলহানিতে সৃষ্ট বিপর্যয়ের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তা, ঠিকাদার এবং পিআইসি দায়ী। বলতে গেলে হাওর এলাকায় চলছে নীরব দুর্ভিক্ষ। আগামীতে কঠিন সময় ক্ষতিগ্রস্ত হাওরবাসী পার করবেন কিভাবে সেটাই এখন ভাবনার বিষয়। এ অবস্থায় ঈদের আনন্দ ম্লান হওয়ারই কথা।
সরকারি যে সাহায্য দেয়া হচ্ছে তা অপ্রতুল। ব্যক্তি ও সংগঠন পর্যায়েও কিছু সাহায্য-সহযোগিতা করা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের। তবে তারাও যেন আত্মপ্রচারে ব্যস্ত ছিলেন। অন্যদিকে জনগণের ভরসাস্থল যে রাজনীতিবিদগণ তারাও এখন ইফতার পার্টিতে মগ্ন। যে কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে ইফতার পার্টি দিচ্ছেন সেই টাকা যদি দুর্গত মানুষের জন্য ব্যয় করা হতো তাহলে তা মন্দ হতো না।
ইফতার পার্টিতে বড় বড় নেতারা একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা জানান দিচ্ছেন। কিন্তু সেখানে বলা হচ্ছেনা ফসলহারা দুর্গত মানুষের কথা। ভাবা হচ্ছে না তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা। উপেক্ষিতই থাকছেন অসহায় কৃষক।
আমরা বলতে চাই, ইফতার পার্টির নামে আত্মপ্রচারের জন্য যে কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করা হচ্ছে, সেই টাকা ফসলহারা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ব্যয় করুন। তাদের মুখে একবেলা আহার তুলে দিন। পাশাপাশি আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, ঈদ উপলক্ষে ফসলহারা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ সহায়তার ব্যবস্থা করুন। আমরা এই ঈদে ফসলহারা কৃষকের মুখে এক চিলতে হাসি দেখতে চাই।