বিদ্যুৎ বিভাগের সেবাপ্রাপ্তি নিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে অভিযোগের অন্ত নেই। নেই ভোগান্তির লাগাম টেনে ধরার কোন উদ্যোগও। হালকা বাতাসে সুনামগঞ্জ শহরে বিদ্যুতের আসা যাওয়া যেন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। সেবাপ্রাপ্তি নিয়ে অভিযোগের উপর অভিযোগ জমা হলেও সে অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। তবে এর পেছনে অন্যতম কারণ বিভাগটির তীব্র লোকবল সংকট। দীর্ঘদিন ধরেই শূন্যপদে কোন লোক না থাকায় খুঁড়িয়ে চলছে সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। আর এ কারণে চাইলেও বিদ্যুৎ সুবিধাভোগকারীদের পক্ষ থেকে উঠে আসা অভিযোগের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগকে। প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকায় স্থানীয় পর্যায় থেকে কর্মী দিয়ে কোন রকমে চালিয়ে নেয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা।
এ বিষয়ে সুনামকণ্ঠে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রায় ১৯ হাজার গ্রাহকের সেবাপ্রদান কার্যক্রমের জন্য সরকারিভাবে ৫৬টি পদ রয়েছে। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ২৪টি পদই দীর্ঘদিন ধরে খালি পড়ে আছে। আর এসব পদে লোকবল না থাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রম থেকেও অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
দীর্ঘদিন ধরে সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে নেই উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কর্মকর্তা পদে কেউ। খালি পড়ে আছে উপ-সহকারি প্রকৌশলীরও একটি পদ। এ দুই গুরুত্বপূর্ণ পদ খালি থাকায় কার্যক্রমের গতি আসছেনা বলে মনে করছেন বিভাগটির কর্মীরা। দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যুৎ বিভাগে নেই উচ্চমান সহকারি পদে কেউ। নি¤œমান সহকারি কাম মুদ্রাক্ষরিক ২টি পদ শূন্য। মিটার রিডার পদে তিনজন থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ১জন। বাকি ২টি পদ দীর্ঘদিন ধরেই শূন্য। গুরুত্বপূর্ণ পদ স্টোর কিপারে নেই কেউ। লাইনম্যান পদে ৫জন থাকার কথা থাকলেও ৪জনই নেই। কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১জন। ইলেক্ট্রিশিয়ান-বি পদটিও দীর্ঘদিন ধরেই খালি পড়ে আছে। নেই গাড়ি চালক পদেও কেউ। সাহায্যকারী পদেও দীর্ঘদিন ধরে নেই দুইজন। ফোরম্যান-এ পদে কর্মরত নেই কেউ। এমএলএসএস কাম গার্ড পদে ৪জনের মধ্যে ১জন নেই। নিম্নমান হিসাব সহকারি ৪টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র একজন। এসবিএ ৪টি পদের মধ্যে ৩টি শূন্য। এছাড়া অভিযোগ গ্রহণ করার জন্য অভিযোগ গ্রহণকারী পদে দীর্ঘদিন ধরে কেউ নেই।
আমরা জানি, কোনো প্রতিষ্ঠানে জনবল সংকট থাকলে সেই প্রতিষ্ঠান থেকে পর্যাপ্ত সেবা দেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অবস্থা একই। আমরা আশা করি, সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করেন গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানের জনবল সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণে অবশ্যই তৎপর হবে।