1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ০২:১৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

রাগীব আলী : বহু চা বাগানের মালিক এখন জেলের মালি

  • আপডেট সময় সোমবার, ২২ মে, ২০১৭

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক তিনি। মালিক বেশ কয়েকটি চা বাগানেরও। সময়ের ব্যবধানে সেই রাগীব আলী এখন বাগানের মালির ভূমিকায়। সিলেটের বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও কথিত দানবীর রাগীব আলীর এখন জেলের বাগানে পানি দেন। ফুলের পরিচর্যা করেন, পরিষ্কার করেন আগাছা। দণ্ডপ্রাপ্ত রাগীব আলীর জন্য এ কাজ নির্ধারণ করে দিয়েছেন কারা কর্তৃপক্ষ।
তার সঙ্গে জেলে আছেন ছেলে আবদুল হাইও। তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কারাগারের লাইব্রেরির বই বিতরণ ও গ্রহণের। বলা যায়, লাইব্রেরিয়ানের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
দুটি মামলায় রাগীব আলী ২৭ বছর এবং তার ছেলে আবদুল হাই ২৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করছেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি এবং প্রতারণা করে তারাপুর চা বাগান দখলের মামলায় তারা সাজাপ্রাপ্ত।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে আছেন ৯২৮৯/এ নম্বর কয়েদি রাগীব আলী। ছেলে আবদুল হাইয়ের কয়েদি নং ৯২৮৮/এ। আইন অনুযায়ী, সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কারা ভোগের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক পরিশ্রমও করতে হয়। কারাগারের কাজের মধ্যে রয়েছে, রান্না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বাগান পরিষ্কার অর্থাৎ মালির কাজ ও কারাগারের লাইব্রেরির বই ব্যবস্থাপনা।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সগির মিয়ার জানান, সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাধারণত কারাগারে ভেতরের কাজগুলো ভাগ করে দেয়া হয়। তবে সামাজিক সম্মান আর বয়সের কথা বিবেচনা করে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের কাজ দেয়া হয়। রাগীব আলী যেহেতু ৮৩ বছরের বৃদ্ধ, তাই তার ইচ্ছা অনুযায়ী বাগানের মালির কাজ দেয়া হয়েছে। তিনি নিয়মিত কাজ করেন। বাগান পরিচর্যা করেন। বাগানে পানি দেন। আগাছা পরিষ্কার করেন।
তিনি জানান, সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা দিনে ৬ ঘণ্টা ১৫ মিনিট কাজ করেন। সকাল ৮টা থেকে ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত আবার দুপুর দেড়টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কাজ করেন।
জেল সুপার আরো জানান, রাগীব আলীর ছেলে আবদুল হাইকে দিয়ে তেমন কোনো কাজ করানো যায় না। তিনি কোনো কাজ ঠিকমতো করতেও পারেন না। তাই তাকে লাইব্রেরির বই দেখাশোনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বন্দিদের তিনি বই দেন, আবার তা ফেরত নেন।
দেবোত্তর সম্পত্তির চা বাগান বন্দোবস্ত নেওয়া ও চায়ের ভূমিতে বিধি বহির্ভূত স্থাপনা করার অভিযোগে ২০০৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আবদুল কাদের বাদী হয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি ও সরকারের এক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দুটি করেন। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করে দেয় পুলিশ।
মামলা দুটি গত বছরের ১৯ জানুয়ারি পুনরুজ্জীবিত করার নির্দেশ দেন সুপ্রিমকোর্ট। এই মামলায় গত বছরের ১০ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল এবং ১২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে ওইদিনই রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই সপরিবারে ভারতে পালিয়ে যান। ১২ নভেম্বর দেশে ফেরার পথে জকিগঞ্জ সীমান্তে আবদুল হাই ও ২৩ নভেম্বর ভারতের করিমগঞ্জে গ্রেপ্তার হন রাগীব আলী।
ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের নিয়ে প্রকাশিত বার্ষিক সাময়িকী ‘হুজ হু’র তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫৬ সালে ১৮ বছর বয়সে লন্ডনে যান রাগীব আলী। সেখানে শেয়ারবাজার, বীমা, আবাসন ও রেস্তোরাঁ ব্যবসা করে তিনি বিত্তশালী বনে যান। পরে দেশে এসে ব্যবসায় হাত দেন। সাউথইস্ট ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, রাগীব আলী সিলেট টি কোম্পানি লিমিটেড, কর্ণফুলী টি কোম্পানি লিমিটেড, রাজনগর টি কোম্পানি লিমিটেডের মালিক। ইউনিয়ন সিন্ডিকেট লিমিটেড, রাগীব আলী সিকিউরিটিজ লিমিটেড, দৈনিক সিলেটের ডাকে তার মালিকানা রয়েছে। ইংরেজি দৈনিক ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসের পর্ষদেও তার নাম রয়েছে। সিলেটের রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, লিডিং ইউনিভার্সিটি ও ঢাকার ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তিনি। একসময় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ডেও চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়া কামাল বাজারের একটি এলাকাকে নিজের নামে ‘রাগীব নগর’ নামকরণ করেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com