সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার শেষ হয়েছে বৃহ¯পতিবার মধ্যরাতে; শুক্রবার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছেন ব্যালট পেপার, বাক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম। আজ শনিবার দিরাই উপজেলার ৯, জগন্নাথপুর উপজেলার ৬ ও শাল্লা উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ১৯টি ইউনিয়নের ২০২টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০৭টিকে ঝুঁকিপূর্ণ বা অতিগুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট চলবে। ‘অতিগুরুত্বপূর্ণ’ কেন্দ্রগুলোতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জে জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম বলেন, তিন উপজেলার মধ্যে দিরাইয়ে ৯টি ইউনিয়নে ৮৬ কেন্দ্রে ও ৩৯৭ কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৪৬ হাজার ১৪৩ জন। শাল্লা উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নে ৩৯ কেন্দ্রে ও ২০৩টি কক্ষে ভোট দেবেন ৭৬ হাজার ৭৯৭ জন ভোটার। এছাড়াও প্রবাসী অধ্যূষিত জগন্নাথপুর উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩ নং মিরপুর ও ৬ নং রানীগঞ্জ স্থগিত থাকায় ৬টিতে নির্বাচন হচ্ছে। এ উপজেলায় ৭৭টি কেন্দ্রে ও ৩১৫টি কক্ষে ১ লাখ ১ হাজার ৬৯ জন ভোটার ভোট দেবেন।
আমাদের জগন্নাথপুর প্রতিনিধি জানান, উপজেলার ৬ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এবারের নির্বাচনে ৬ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩২ জন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য পদে ৬০ জন ও সাধারণ ওয়ার্ডের পুরুষ সদস্য পদে ২২৭ জনসহ মোট ৩৬০ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলার ১নং কলকলিয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলহাজ্ব আব্দুল হাসিম (চশমা), আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী দ্বীপক কান্তি দে দীপাল (নৌকা), বিএনপি’র চেয়ারম্যান প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিক মিয়া (ধানের শীষ), জাপা’র চেয়ারম্যান প্রার্থী গয়াছ মিয়া (লাঙ্গল) ও স্বতন্ত্র¿ চেয়ারম্যান প্রার্থী সাজিদুর রহমান (আনারস)। এ ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৩ টি ওয়ার্ডে নারী সদস্য প্রার্থী ১২ জন ও সাধারণ ৯টি ওয়ার্ডে পুরুষ সদস্য প্রার্থী ৪১ জনসহ মোট ৫৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
২নং পাটলি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিরাজুল হক (আনারস), আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আংগুর মিয়া (নৌকা), জাপা’র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. দবির মিয়া (লাঙ্গল), বিএনপি’র চেয়ারম্যান প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুর রহমান রফু (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আশিক মিয়া শিকদার (মোটর সাইকেল)। এ ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডে ৮ জন নারী সদস্য ও সাধারণ ৯টি ওয়ার্ডে ২৮ জন পুরুষ সদস্য প্রার্থীসহ মোট ৪১জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
৫নং চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য প্রবাসী মো. আরশ মিয়া (নৌকা), স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য প্রবাসী হারুনুর রশীদ (আনারস), বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুর রব (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারুক মিয়া ময়না (মোটরসাইকেল)। ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৩ টি ওয়ার্ডে ১২ জন নারী সদস্য ও সাধারণ ৯টি ওয়ার্ডে ৪০ জন পুরুষ সদস্য প্রার্থীসহ মোট ৫৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
৭নং সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবুল হাসান (নৌকা), বিএনপি’র চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ মোছাব্বির আহমদ (ধানের শীষ), জাপার চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম কামালী (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী তৈয়ব মিয়া কামালী (আনারস), স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী বদরুল আলম খান (চশমা) ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ তোফায়েল আহমদ (মোটর সাইকেল)। এ ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডে ৭ জন নারী সদস্য ও সাধারণ ৯টি ওয়ার্ডে ৩৫ জন পুরুষ সদস্য প্রার্থীসহ মোট ৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
৮ নং আশারকান্দি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আইয়ূব খান (চশমা), সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ মদরিছ (আনারস), হিরা মিয়া (ঘোড়া), আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহ আবু ঈমানী (নৌকা) ও বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী ফখরুল ইসলাম খান (ধানের শীষ)। এ ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডে ১০ জন নারী সদস্য ও সাধারণ ৯টি ওয়ার্ডে ৪২ জন পুরুষ সদস্য প্রার্থীসহ মোট ৫৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
৯ নং পাইলগাঁও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আপ্তাব উদ্দিন (নৌকা), স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলী আফজল (মোটর সাইকেল), বিএনপি’র চেয়ারম্যান প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী জালাল উদ্দিন (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাওলানা দবিরুল ইসলাম (চশমা), যুক্তরাজ্য প্রবাসী শামীম হোসাইন (আনারস), হাজী মখলুছ মিয়া (ঘোড়া) ও আবুল কাশেম (টেলিফোন)। এ ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডে ১১জন নারী সদস্য ও সাধারণ ৯টি ওয়ার্ডে ৩৯ জন পুরুষ সদস্য প্রার্থীসহ মোট ৫৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সব মিলিয়ে ৬ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩২, নারী সদস্য পদে ৬০ ও সাধারণ সদস্য পদে ২২৮ মোট ৩২০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে, দিরাই-শাল্লার ১৩ ইউনিয়নে ১২৫ ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দিরাই উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ৮৬টি কেন্দ্রের সবকটিই ঝুঁকিপূর্ণ।
আমাদের শাল্লা প্রতিনিধি জানান, উপজেলার চারটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ২০জন। এদের মধ্যে আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেনÑ ১নং আটগাঁও ইউপিতে আবুল কাশেম আজাদ, ২নং হবিবপুর ইউনিয়নে বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল, ৩নং বাহাড়া ইউনিয়নে বিধান চন্দ্র চৌধুরী ও ৪নং শাল্লা ইউনিয়নের আব্দুস ছত্তার মিয়া। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠ রয়েছেন ১০জন। তাঁরা হলেন ১নং আটগাঁও ইউনিয়নে হাজিরুল ইসলাম, ফজলুর রহমান, খোরশেদ মিয়া, আব্দুর রহমান, সেলিম উদ্দিন, মো. জুবায়ের মনির, মো. জাকির হোসেন, ২নং হবিবপুর ইউনিয়নে সুবল চন্দ্র দাস, ৩নং বাহাড়া ইউনিয়নে নরেশ চন্দ্র চৌধুরী, ৪নং শাল্লা ইউনিয়নে জামান চৌধুরী ফুল মিয়া, আবু লেইছ চৌধুরী।
অন্যদিকে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম সিরাজ শাল্লা ইউপিতে এককভাবে লড়ছেন। আটগাঁও ইউপিতে বিএনপি’র দলীয় প্রার্থী আব্দুল্লাহ আন নোমান, বিদ্রোহী প্রার্থী নজরুল ইসলাম ও হবিবপুর ইউনিয়নে বিএনপির দলীয় প্রতীকপ্রাপ্ত শৈলেন কুমার দাস এককপ্রার্থী হয়েছেন। বাহাড়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন বিএনপি’র জাকির হোসেন। শাল্লা উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ৭৫ হাজার ৬শ’ ৬জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫৮ হাজার ৪শ’ ৩৫ আর মহিলা ভোটার ৫৫হাজার ৩শ’ ১৮জন।
আমাদের দিরাই প্রতিনিধি জানান, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত ও সাধারণ সদস্য পদে ৫১৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫০ জন, সংরক্ষিত ১১০ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৫৯ জন প্রার্থী রয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাঁরা হলেন রফিনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজুয়ান হোসেন খান, বিএনপির প্রার্থী আনিসুর রহমান, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর চৌধুরী, আল মামুন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মহসিন রেজা, বিকাশ রঞ্জন তালুকদার। ভাটিপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির আফজাল হোসেন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান কাজী, মাহবুব বখত চৌধুরী, স্বতন্ত্র বেলাল আহমদ, আলমগীর বখত চৌধুরী। রাজানগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সৌম্য চৌধুরী, বিএনপি প্রার্থী জুনায়েদ মিয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল, নওশেরান চৌধুরী, রুনু মিয়া সরদার, আব্দুল হক। চরনারচর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী পরিতোষ রায়, বিএনপি প্রার্থী রতন কুমার দাস, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী শাহীন সুলতান শাহজাহান, স্বতন্ত্র প্রার্থী পরেশ লাল দাস। দিরাই সরমঙ্গল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কানু লাল দাস, বিএনপি প্রার্থী উপজেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান এহসান চৌধুরী, জাসদ প্রার্থী কৃষ্ণকান্ত রায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানন্দ দাস। করিমপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আছাব উদ্দিন সরদার, বিএনপি প্রার্থী আব্দুর রহিম, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান সরদার। জগদল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হুমায়ুন রশীদ লাভলু, বিএনপি প্রার্থী কামরুল ইসলাম, জমিয়তে ওলামা প্রার্থী কেএম তোফায়েল আহমদ, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সোলায়মান হাসান, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. শিবলী আহমদ বেগ। তাড়ল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আহম্মদ চৌধুরী, বিএনপি প্রার্থী আলী আহমদ, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আকিকুর রেজা পুলিশ, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল হক তালুকদার, স্বতন্ত্র প্রার্থী রুহুল আমিন, ধ্রুপদ চৌধুরী নুপুর, আব্দুল কুদ্দুস, গিয়াস উদ্দিন। কুলঞ্জ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মিলন মিয়া, বিএনপি প্রার্থী মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আহাদ মিয়া, একরার হোসেন, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মিসবাউজ্জামান চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী পবিত্র মোহন দাস ও কাওসার গাজী চৌধুরী।