1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

প্রধানমন্ত্রী আপনিই আমাদের শেষ ভরসা : মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান

  • আপডেট সময় রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৭

শুনেছি পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে। পৃথিবী বিখ্যাত সেই চেরাপুঞ্জি হতে মেঘালয়ে অসংখ্য পাহাড়ের পাদদেশে অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশের একপ্রান্তে অবস্থিত সুনামগঞ্জ জেলা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি জানেন, এই জেলাটির ভৌগোলিক অবস্থান বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের। এখানে হাওর-বাঁওর, নদী-নালার এতো সমাহার যে পৃথিবীর অন্যকোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই।
এখানে হাওর-বাঁওর নদী-নালায় সৃষ্টিকর্তা দু’হাত খুলে দান করেছেন অফুরন্ত সম্পদ। হাওর-বিল, নদী-নালার মিঠা পানিতে যে সুস্বাদু মাছ বিনা যতেœ উৎপাদিত হয় তা পৃথিবীর অন্য কোথাও উৎপাদিত হয় কিনা এরকম বিরল দৃষ্টান্ত আমার জানা নেই। এখানকার সহজ-সরল মানুষেরা আবার হেমন্তে এই সমস্ত হাওর-বাঁওরগুলোতে উৎপন্ন করে হাজার হাজার মণ ধান। পাহাড়ি নদীগুলোর মাধ্যমে ভরা বর্ষায় ভারত থেকে ভেসে আসে নুড়ি পাথর আর উন্নতমানের বালু। দেশের বৃহত্তম সিমেন্ট কারখানাটিও এ জেলায় অবস্থিত। এখানকার উৎপাদিত মাছ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রসনা তৃপ্তি ঘটিয়ে থাকে। ধান দিয়ে জেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলাগুলোতে রপ্তানি হয়। এখানকার বালু পাথর সারাদেশে যোগাযোগ ও সুরম্য অট্টালিকায় ব্যবহৃত হচ্ছে যুগ যুগ ধরে। এসমস্ত স¤পদ থেকে আহরিত অর্থ সরকারের রাজস্ব খাতে কোটি কোটি টাকা দিয়ে থাকে এখানকার মানুষ। অথচ পাহাড়ি ঢল থেকে ফসল রক্ষার নামে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ সরকার মহোদয় করে থাকেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি শুনে অবাক হবেন যে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত টাকাগুলো আত্মসাৎ করার অভিপ্রায়ে হাওরে শুরু হয় সাগর চুরি। পৃথিবীর কোনো জায়গায় এমন ‘বালির বাঁধ’ নির্মাণ হয়েছে কিনা তা আপনি একটু জানার চেষ্টা করুন। যারা যুগ যুগ ধরে মানুষের পেটে লাথি দেওয়ার জন্য বাঁধ নির্মাণ কাজের বরাদ্দ লুটপাট করে, মানুষকে কষ্ট দিয়েছে, ধোঁকা দিয়েছে তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে রাষ্ট্রীয় তহবিলের টাকাগুলো উদ্ধার করুন।
হাওর এলাকার লুটপাট প্রতিবছর পাউবো’র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কিছু সংখ্যক বাইরের টাউট, বাটপারদের একটি অভ্যাস আর নিয়মে পরিণত করেছে। যারা ছোটছোট শিশুদের পেটে লাথি মেরে অবহেলা আর ইচ্ছাকৃত দুর্নীতি করে তাদের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়েছে। স্ত্রীর জন্য বাহারি হার আর কন্যার জন্য নাকফুল ঐ লুটের পয়সায় তৈরি করে মানুষকে কষ্ট দিয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করে চাকরি হতে ছাঁটাই করতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতিতে লিপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বলছি কোনো ছেলে অথবা মেয়ে রাজাকারের সন্তান হিসাবে যেমন নিজের পরিচয় দেয়না ঠিক তেমনি ঘুষখোর পিতার সন্তান হিসেবে আপনাদের পরিচয়ও দিবেনা।
যে বছর প্রকৃতির মেজাজ ভালো থাকো সেই বছর পাউবো বলে থাকে আমরা বাঁধ দিয়েছিলাম বলে মানুষের ঘরে ফসল উঠেছে। আর বানের পানিতে তলিয়ে গেলে আমরাতো চেষ্টা করেছি কিন্তু নিয়ে গেছেন আল্লাহ। আমাদের করার কিছু ছিল না।
সত্তরের নির্বাচনের আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এসেছিলেন হাওর এলাকার মানুষের জীবন যাপন আর সুখদুঃখ দেখার জন্য। বজ্রকণ্ঠে বলেছিলেন আমি বা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে ভাটি বাংলার হাওর এলাকার সমস্যার সমাধান করব। স্বাধীনতার পর জাতির জনক হাওরবাসীর সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু পদক্ষেপও নিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় কিছু সংখ্যক বিপথগামী সৈনিক ও কিছু বেঈমান রাজনৈতিক নেতা ষড়যন্ত্র করে তাঁকে সপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত করতে পারেননি। হাওরের আশেপাশের নদী ও হাওর এলাকা পলিতে ভরে যাওয়ায় ভাটি বাংলা আজ সমস্যা জর্জরিত এলাকা হিসাবে চিহ্নিত হতে যাচ্ছে।
হে মহান নেত্রী, আপনি সবই জানেন, সবই বুঝেন। এই এলাকা বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে কি কি দরকার তাও আপনার জানা। হাওর এলাকার কোটি মানুষের আশা ভরসার প্রতীক আপনি। আপনার আগমনে এই এলাকার মানুষ আত্মবলে বলিয়ান হয়ে আপনার মুখপানে চেয়ে আছে। কিভাবে আগামী ফসল ঘরে না তোলা পর্যন্ত মানুষ বেঁচে থাকবে, কাজের সংস্থান পাবে তা নির্ভর করছে আপনার পদক্ষেপের উপর।
আপনার কাছে এই দুর্যোগের সময় হতবিহ্বল মানুষ কিছুই চায় না। চায় অতীতে যেভাবে সুনামগঞ্জের মানুষকে ভালবেসেছেন সেভাবে শুধু আপনার ভালবাসাটুকু দিবেন ও সুনামগঞ্জের প্রতি নজর রাখবেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন সৈনিক হিসাবে আপনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com