একে কুদরত পাশা ::
আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে জমজমাট প্রচার-প্রচারণা চলছে দিরাই উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে। দলীয় প্রার্থীদের পাশাপাশি বিদ্রোহী প্রার্থীরা ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনপি’র প্রার্থীদের পক্ষে জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক, দিরাই-শাল্লার সাবেক এমপি নাছির উদ্দিন চৌধুরী দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। অপরদিকে দিরাই-শাল্লার এমপি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অসুস্থ থাকায় তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেননি। তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান দু’টি ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন।
বিদ্রোহী প্রার্থীদের দমাতে না পারায় আ.লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছেন। নির্বাচনে জয়ী হতে হলে দলীয় প্রার্থীদের অনেক কাঠ-খড় পুড়াতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় অভিজ্ঞজনরা।
স্থানীয় লোকজনদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, রফিনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজুয়ান খান এবং বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর চৌধুরীর মধ্যে ভোট ভাগাভাগিতে সুযোগ নিতে চাচ্ছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আনিছুর রহমান। ভোটাররা মনে করছেন আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ না হতে পারলে এখানে বিএনপি প্রার্থী চমক দেখাতে পারেন।
ভাটিপাড়া ইউনিয়নেও একই অবস্থা। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সমর্থিত ভাটিপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ শাহজাহান কাজীর সঙ্গে রয়েছেন দিরাই আওয়ামী লীগ নেতারা। অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জাহেদ চৌধুরী’র পক্ষে গণসংযোগে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিউর রহমান। সে সুযোগে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আফজাল হোসেন জয়ের মালা পরতে পারেন বলে অনেকে ধারণা করছেন।
রাজানগর ইউনিয়নে ছয় জন প্রার্থীর মধ্যে ৫জনই আওয়ামী পরিবারের। বিএনপি’র একমাত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন দলীয় নেতারা। এখানে মূল ভোটযুদ্ধ হবে বিএনপির জুনায়েদ আহমদ, আওয়ামী লীগের সৌম্য চৌধুরী, স্বতন্ত্র সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হক ও নওশেরান চৌধুরীর মধ্যে।
সাধারণ ভোটাররা জানান, চরনারচর ইউনিয়নে নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে লড়াই হবে জমজমাট।
দিরাই-সরমঙ্গল ইউনিয়নে ভোটের হিসেব পাল্টে দিচ্ছেন বিএনপি’র বিদ্রোহী প্রার্থী এহসান চৌধুরী। এ ইউনিয়নেও আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন।
উপজেলার চেয়ারম্যান পদে সবচেয়ে কম প্রার্থী রয়েছেন করিমপুর ইউনিয়নে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান, দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আছাব উদ্দিন সরদার এবং আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী দিরাই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন এ ইউনিয়নে। বিএনপি’র একমাত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন আব্দুর রহিম মাস্টার। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান সরদারের সঙ্গে রয়েছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।
জগদল ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হুমায়ূন রশিদ লাভলু এবং বিদ্রোহীপ্রার্থী শিবলী বেগের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় অভিজ্ঞজনরা। এ ইউনিয়নে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান লাভলুর পক্ষে এবং দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, পৌর মেয়র মোশারফ মিয়া চেয়ারম্যানপ্রার্থী শিবলীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এ নিয়ে নির্বাচনী উত্তাপ দিন দিন বাড়ছে। আ.লীগের দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থীর লড়াইয়ের মধ্যে ‘সুযোগে’র অপেক্ষায় রয়েছেন বিএনপি প্রার্থী কামরুল ইসলাম।
তাড়ল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আহমদ চৌধুরী ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আলী আহমদ নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান আকিকুর রেজা পুলিশ ও বিএনপি’র বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল হক তালুকদারের মধ্যে।
কুলঞ্জ ইউনিয়নে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় জয়ের হিসেব মেলাতে অনেকটাই দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন সাধারণ ভোটাররা। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিলন মিয়াকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ, বিদ্রোহী প্রার্থী একরার হোসেন ও পবিত্র কুমার। অপরদিকে বিএনপি সমর্থিত মুজিবুর রহমানের জয়ের রথ থামাতে বিদ্রোহী হিসেবে মাঠে রয়েছেন মিছবাউজ্জামান চৌধুরী।