ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার প্রায় সকল হাওরের ফসল তলিয়ে গেছে। হাওরে এখন হাহাকার। গত কয়দিন আগে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে রবিশস্য। ফলে মরার উপর খাড়ার ঘা’র মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিয়েছে জেলাজুড়ে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষি। আশঙ্কা করা হচ্ছে নিদানের।
ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পাউবো’র ‘বালির বাঁধ’ ভেঙে ফসলহানির ঘটনায় হাওরজুড়ে এখন কান্নার রোল। ঢলের পানিতে জেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ। ওই সকল এলাকায় দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট। এ অবস্থায় মানুষ দিশেহারা।
অন্যদিকে, হাওরের ফসল তলিয়ে যাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও চালের দাম বেড়েই চলেছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চালের দাম বৃদ্ধি করে চলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত একমাস আগে পুরাতন আতব ২৮ চালের দাম খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ছিল ৩৬ টাকা করে। এখন একই চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে খুচরা বাজারে পুরাতন আতব ২৮ চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে আরও ৫ টাকা করে। এছাড়াও পুরাতন আতব ২৯ গত সপ্তাহে ছিল ৪৪ টাকা প্রতি কেজি, বর্তমানে ৪৮ টাকা প্রতি কেজি। আমন নতুন ২৮ ছিল প্রতি কেজি ৩৮ টাকা, বর্তমানে ৪২ টাকা প্রতি কেজি খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। আমনের পাইজং গত সপ্তাহে ছিল ৪০ টাকা প্রতি কেজি। বর্তমানে ৪৫ টাকা প্রতি কেজি খুচরা দামে বিক্রি হচ্ছে। চালের বাজারকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে প্রয়োজন খোলাবাজারে (ওএমএস) এর চাল বিক্রির ব্যবস্থা করা। খোলাবাজারে চাল বিক্রি হলে কিছুটা হলেও চালের দাম স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হবে বলে সচেতনমহল মনে করেন।
অপরদিকে, গত রোববার ভোররাতে শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রোববার ভোররাতে প্রায় আধ ঘণ্টাব্যাপী এ শীলাবৃষ্টি ও ঝড় হয়। এতে সদর উপজেলার ৯ ইউনিয়নের প্রায় ৬ হাজার বসতঘর ও গাছপালা এবং রবিশস্যর মারাত্মক ক্ষতি হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নে।
জেলার হাট-বাজারে চালের দাম, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম স্থিতিশীল রাখলে সাধারণ মানুষ হয়তো কিছুটা স্বস্তির মধ্যে থাকবেন। এক্ষেত্রে প্রশাসন জরুরি ব্যবস্থাগ্রহণ করবেন এটাই প্রত্যাশা করি।