1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ০৭:২০ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করুন

  • আপডেট সময় সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৭

অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাওরের বাঁধ ভেঙে বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় সুনামগঞ্জ জেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। ফসল হারিয়ে হাওরপাড়ের লক্ষ লক্ষ কৃষক এখন দিশেহারা। প্রতিদিনই কোনো না কোনো হাওরের বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে। সুনামগঞ্জ জেলার দেখার হাওর, শনির হাওর, চন্দ্র সোনার থাল হাওর, খরচার হাওর, নলুয়ার হাওরসহ প্রায় সব হাওরের স¤পূর্ণ ফসল তলিয়ে গেছে।
সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে কৃষক-জনতা মানববন্ধন ও সভা-সমাবেশ করছেন। কৃষকরা বাঁধ রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা করলেও এখন আর হাওরে কোনো ঠিকাদার, পিআইসি’র লোকজন এবং পাউবো’র কোনো কর্মকর্তাকে দেখা যায় না। ঢলে হাওরের বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় মনে হয়, তারা বাঁধ রক্ষার দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছে। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ থাকে কিংবা ফোন করলেও রিসিভ করেন না। ফলে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের বিষয়ে জানার বিষয়টিও অজানায় পরিণত হয়ে গেছে।
প্রতি বছরের মতোই হাওরে এখন কৃষকের কান্নার রোল। আর গত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এ বছরও বোরো ফসল বাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে। সর্বস্ব হারিয়ে কৃষক বিক্ষুব্ধ হয়ে পাউবো’র দুর্নীতি এবং ঠিকাদারদের গাফিলতিকে দায়ী করে তাদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলছেন। রোববার দেখার হাওরের বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর বিক্ষুব্ধ কৃষক-জনতা দুর্নীতিবাজদের বিচার দাবি করে বিক্ষোভ করেন। পাশাপাশি তারা সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানান।
সুনামগঞ্জের অর্থনীতি পুরোটাই কৃষিনির্ভর। কৃষি বিপর্যস্ত হলে হাওর এলাকার সব ধরনের আয়ের উৎস সংকুচিত হয়। তাই এবারের ফসলহানির বিশাল বিস্তৃত প্রতিক্রিয়াকে অস্বীকার না করে একে মোকাবিলা করতে হবে সকলে। যেসব কৃষক নিজের জমি কিংবা অন্যের জমি বর্গা বা বন্ধক এনে চাষবাদ করেন, তারা ফসল উৎপাদনের জন্যও মহাজন, ব্যাংক বা এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে থাকেন। এবার যখন ওই কৃষকদের ফসলহানি ঘটছে, তখন তাদের উপর ঋণ পরিশোধের চাপ আরো বেশি পরিমাণে বেড়ে যাবে। ফলে প্রতি বছরের ন্যায় গরু-ছাগল, ভিটেমাটি বিক্রি করে চড়া সুদে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে। ফসল হারানোর পর এসব ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকসহ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য এখন ঋণ পরিশোধের চাপটি প্রধান সমস্যা হিসাবে গ্রামাঞ্চলে আবির্ভূত হবে। এরপর তাদের দৈনিন্দন জীবন যাপন, বাসস্থান ও জীবনের অন্যান্য প্রয়োজন মিটানোর বিষয়টি সামনে আসবে। সর্বশেষে পরবর্তী ফসল উৎপাদনের বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে বিবেচিত হবে। তবে এই সময়ের মধ্যে ক্ষুদ্র কৃষকরা হয়তো তাদের সর্বশেষ সম্বল জমিটুকু বিক্রয় করতে বাধ্য হবেন।
আমরা মনে করি, ফসলহানির পর এই সুনামগঞ্জ জেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি অবান্তর কোনো বিষয় নয়। কৃষক ও কৃষির উপর নির্ভরশীল জেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হবে সঠিক পদক্ষেপ। আমরা জানি, সরকার জেলার দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ফসলহানির যাবতীয় তথ্য পেয়ে থাকেন। এই তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কোনো ধরনের ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে জেলার কর্মকর্তাবৃন্দ বোরো ফসলের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ মনগড়াভাবে হিসাব করবেন না এটাই আমরা চাই। এই মুহূর্তে যদি অসহায় কৃষক সরকারের নিকট থেকে কোনো ধরনের সাহায্য না পায় তাহলে তারা আরো দিশেহারা হয়ে পড়বে। তাই সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করেন কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি সবিনয় নিবেদন জানাই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com