বিশেষ প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইর রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমানুর রাজা চৌধুরীর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান মোকারম হোসেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী নিজ গ্রাম দৌলতপুরেও আছেন চ্যালেঞ্জের মুখে। কারণ নিজ গ্রামে তাঁকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে প্রার্থী হয়েছেন জনৈক নূরুজ্জামান। গ্রামের একটি অংশ তাঁর সঙ্গেও প্রচারণা চালাচ্ছে। অন্যদিকে ইউনিয়নের বৃহত্তম গ্রাম রাজাপুর থেকে এবার একক প্রার্থী হয়েছেন ঐতিহ্যবাহী চৌধুরী পরিবারের সন্তান আমানুর রাজা চৌধুরী। ইউনিয়নের প্রথম চেয়ারম্যান প্রয়াত পিতা মনফর রাজা চৌধুরীর জনপ্রিয়তা তাঁকে ভোটের মাঠে এগিয়ে রেখেছে বলে বোদ্ধাদের অভিমত।
তৃণমূল এবং উপজেলা থেকে দলীয় সমর্থন পেলেও শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় রাজাপুর গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে আমানুর রাজা চৌধুরীকে একক প্রার্থী দিয়ে বিরামহীন প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনী বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ইউনিয়নে এবার ‘দলীয় প্রতীক’ আঞ্চলিকতার আবেগে ভেসে গেছে। প্রতীকের চেয়ে এলাকার প্রার্থীকে নিয়েই আলোচনায় রয়েছেন সাধারণ ভোটাররা।
জানা যায়, হাওর বেষ্টিত এই ইউনিয়নে মোট ভোটার প্রায় ৬৭০০। গতবার ৬০০ ভোটারের গ্রাম দৌলতপুর থেকে মোকারম হোসেন প্রার্থীতা দিয়ে নির্বাচিত হন। এবার তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেলেও তাঁর সঙ্গে একই গ্রামের নূরুজ্জামান নামের আরেক যুবক গ্রামের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এ কারণে তাঁর নির্দিষ্ট ভোটব্যাংকেও টান পড়েছে বলে ভোটারদের অভিমত। তাছাড়া গেলবার রাজাপুরের ভোটাররাও নানা হিসেব-নিকেশ করে মোকারম হোসেনকে রায় দিলেও এবার রাজাপুর গ্রামবাসী একক প্রার্থী করেছেন আমানুর রাজা চৌধুরীকে। আমানুর রাজা চৌধুরীর পিতা মনফর রাজা চৌধুরীও ছিলেন এ ইউনিয়নের প্রথম চেয়ারম্যান। তিনি টানা তিনবার নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর ছেলে হিসেবেও আমানুর রাজা চৌধুরী এলাকায় সর্বমহলে আলোচিত হচ্ছেন।
এলাকাবাসী জানান, বৃহত্তম রাজাপুর গ্রাম থেকে বরাবর ৩-৪জন প্রার্থী হন। এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় এই গ্রামের তরুণ সমাজসেবী ও সংস্কৃতিকর্মী আমানুর রাজা চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দাবি করেন। তৃণমূল এবং উপজেলা থেকেও দলীয় সমর্থন পান তিনি। মনোনয়ন দৌড়ে তিনি এগিয়ে থাকলেও অভিযোগ রয়েছে ‘মনোনয়ন বাণিজ্যে’র কারণে তাঁর বদলে বর্তমান চেয়ারম্যানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পরে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী অন্যান্য প্রার্থীদের বসিয়ে তাঁকে গ্রাম থেকে একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে। তাছাড়া তাঁর পরিবারের সুনামের কারণেও আশপাশের গ্রামের সাধারণ ভোটাররাও তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এখন প্রতীক পেয়ে তিনি নিজ গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের সমর্থকদের নিয়ে তিনি সরব প্রচারণা চালাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোকারম হোসেন বলেন, নির্বাচনে এখন আর আঞ্চলিকতা ইস্যুর সুযোগ নেই। প্রতীকই বড় কথা। আমি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামেই সমাদৃত হচ্ছি। আমাকে নির্বাচিত করতে তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
আমানুর রাজা চৌধুরী বলেন, আমি সাধারণ মানুষের প্রার্থী। আমার গ্রামের আপামর মানুষ এবার আমাকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তাছাড়া এলাকার প্রতিটি গ্রামের মানুষজনই আমাদের পরিবারের সঙ্গে যুগযুগ ধরে নানাভাবে যুক্ত আছেন। তাঁরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন।