1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ১০:০৩ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বেগম সম্পাদক নূরজাহান আর নেই

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৩ মে, ২০১৬

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন সাপ্তাহিক ‘বেগম’ পত্রিকার স¤পাদক নূরজাহান বেগম। নূর জাহান বেগম সোমবার সকালে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। তিনি দুই মেয়ে ফ্লোরা নাসরিন খান ও রীনা ইয়াসমিনসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর নারিন্দার বাসভবন ও গুলশান জামে মসজিদে দুই দফা জানাজা ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
নূরজাহান বেগমকে বলা হয় সাম্প্রতিককালের নারী জাগরণের পথিকৃৎ। নারী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ এই ব্যক্তিত্ব উপমহাদশের প্রথম নারী বিষয়ক সাপ্তাহিক পত্রিকার স¤পাদক হিসেবে ঘরের চার দেয়ালে আবদ্ধ থাকা নারীদের জাগিয়ে তুলেছিলেন।
স্কয়ার হাসপাতালের মেডিসিন অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. মির্জা নাজিম উদ্দিন জানান, নূরজাহান বেগম সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে মারা যান।
নূরজাহান বেগমের বড় মেয়ে ফ্লোরা নাসরিন খান সাংবাদিকদের জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকালে তার মা মারা গেছেন।
গত ৪ মে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এ গুণী ব্যক্তিত্বকে। অবস্থার অবনতি হলে ৭ মে শনিবার নূরজাহান বেগমকে আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে) রাখা হয়। সেখানে আমৃত্যু ভ্যান্টিলেশনের মাধ্যমে তার শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা হয়। স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নূরজাহান বেগমের চিকিৎসার স¤পূর্ণ দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নূরজাহান বেগমের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের ¯িপকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
সেখানে তার বড় মেয়ে ফ্লোরা নাসরিন খান বলেন, ‘বেগম পত্রিকাটি তার আত্মার সঙ্গে মিশে ছিলো। এ পত্রিকাটির জন্যই তিনি বেঁচে ছিলেন। আমরা বেগমের ঈদ সংখাটির প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সেই সময় তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আমি ও আমার ছোট বোন দু’জন মিলে বেগম পত্রিকা প্রকাশনা অব্যাহত রাখবো ও ঈদ সংখ্যা বের করবো। এটাই আমার মায়ের ইচ্ছা ছিলো।’
চাঁদপুর জেলার চালিতাতলী গ্রামে ১৯২৫ সালের ৪ঠা জুন নূরজাহান বেগমের জন্ম। নূরজাহান বেগমের পিতা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ছিলেন স্বনামধন্য সাংবাদিক এবং মাসিক সওগাতের স¤পাদক। তাঁর পিতার আগ্রহ ও অনুপ্রেরণায় তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। তাঁর স্বামী রোকনুজ্জামান খান সংবাদপত্র জগতের একজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। ‘দাদাভাই’ নামে দৈনিক ইত্তেফাকের ‘কচিকাঁচার আসর’ বিভাগটি তিনি স¤পাদনা করতেন। ১৯৫২ সালে রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাইয়ের সঙ্গে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সাহিত্যিক হিসাবেও তিনি নিজের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। শুধু সাংবাদিকতা ও সাহিত্যিক ছিলেন না আজীবন মানুষের সেবায় কাজ করেছেন। যুক্ত ছিলেন জোনটা ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ, মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।
নূরজাহান বেগম অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেছেন। ১৯৯৬ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ত্ব হিসেবে নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠ চক্রের সম্মাননা লাভ করেন। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকার থেকে রোকেয়া পদক, ১৯৯৯ সালে গেন্ডারিয়া মহিলা সমিতি থেকে শুভেচ্ছা ক্রেস্ট, ২০০২ সালে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার, ২০০৩ ও ২০০৫ সালে নারী পক্ষ দুর্বার নেটওয়ার্ক ও কন্যা শিশু দিবস উদ্যাপন কমিটির পক্ষ থেকে তিনি সংবর্ধনা লাভ করেন। এছাড়াও তিনি সংবর্ধিত হয়েছেন বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ, চট্টগ্রাম লেডিস ক্লাব, চট্টগ্রাম লেখিকা সংঘ, ঢাকা লেডিজ ক্লাব, ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র প্রভৃতি সংগঠনের মাধ্যমে। স্বর্ণপদক পেয়েছেন বাংলাদেশ মহিলা সমিতি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, লেখিকা সংঘ, কাজী জেবুননেসা মাহাবুবুল্লাহ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ সাংবাদিক ফোরাম, রোটারি ক্লাব প্রভৃতি সংগঠন থেকে। ২০১০ সালে পত্রিকা শিল্পে তাঁর অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক নারী সংগঠন ইনার হুইল ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮ সম্মাননা পান তিনি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com