মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী ::
দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের সাহেবেরগাঁও উপ-সেচ প্রকল্প স্থাপিত হওয়ায় অন্তত ৬শত হেক্টর পতিত জমি এখন আবাদের আওতায় এসেছে। গত বছর জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-এর অর্থায়নে স্থানীয় এলজিইডি কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে ২ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় পানি সংরক্ষণের হেডার ট্যাংক। প্রতি শুষ্ক মৌসুমে মরা সুরমা নদী হতে পানি সংরক্ষণ করে বরিড পাইপ নেটওয়ার্ক পদ্ধতির মাধ্যমে দোহালিয়া ও পান্ডারগাঁও দুই ইউনিয়নের গুতমানিক হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকায় কৃষকরা দীর্ঘদিনের অনাবাদি পতিত জমি আবাদ করছেন। অতীতে এ অঞ্চলের কৃষকরা পানির অভাবে ইরি-বোরো চাষাবাদ করতে পারেনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, উপজেলার সাহেবেরগাঁও সেচ উপ-প্রকল্পের মাধ্যমে হেডার ট্যাংক স্থাপনের পর থেকে ৬ গ্রামের ৫ শতাধিক কৃষক পরিবার পানির সমবণ্টনের সুবিধাভোগ করে ব্যাপক হারে ইরি-বোরো চাষাবাদ করেছেন হাওরে। সম্প্রতি বৈরী আবহাওয়া আর বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাঠভরা পাকা সোনালী ফসল কেটে ঘরে তুলতে দেখাগেছে এখানকার কৃষকদের। গোলায় পাকা ধান তুলতে উৎসাহ-উদ্দীপনায় কৃষক-কৃষাণীরা কাজ করছেন। অন্যদিকে চলতি বছরে সাহেবেরগাঁও সেচ উপ-প্রকল্পের আওতাধীন গুতমানিক হাওরে আগাম বন্যার কবল থেকে ফসল রক্ষায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। হিম্মতেরগাঁও পাকা সড়ক হতে করিল্লার পাড় জামে মসজিদ পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মাটি ভরাটের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আর এ কারণে আগামী বোরো মৌসুমে আগাম বন্যায় ফসলহানির কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
সাহেবেরগাঁও গ্রামের কৃষক সুনুর ইসলাম জানান, উপ-সেচ প্রকল্পের আওতায় হেডার ট্যাংক স্থাপন ও আগাম বন্যায় হাওরের ফসল রক্ষায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করায় স্বস্তিতে আমরা। অতীতে গুতমানিক হাওরে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ করা যায়নি। গত বছর থেকে হাওরে সহ¯্রাধিক কৃষকরা সংরক্ষিত পানি সমবন্টনের মাধ্যমে ইরি-বোরো চাষাবাদ করতে পারছে।
হিম্মতেরগাঁও গ্রামের কৃষক মনফর আলী বলেন, উপ-সেচ প্রকল্প স্থাপন ও হাওরে এ বছর বেড়িবাঁধ নির্মাণ করায় আমরা এখন দীর্ঘদিনের পতিত জমিগুলো চাষাবাদ করতে পারছি। ইরি-বোরো সোনালী ফসল এখন কৃষকদের গোলায় উঠছে। তবে ওই কৃষক আরো জানান, হাওরপাড়ের করুল্লার খালে দেওয়ান নগর গ্রামের নিকটবর্তী স্লুইসগেট নির্মাণ করা হলে উপ-সেচ প্রকল্পের আওতাধীন ছাড়াও বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষকরা ব্যাপক চাষাবাদের সুযোগ পাবে।
উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুর রহমান জানান, সাহেবেরগাঁও উপ-সেচ প্রকল্প স্থাপনের পর আগাম ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি এ অঞ্চলের কৃষকরা আগামী বোরো মৌসুমে ফসলহানির হাত থেকে রক্ষা পাবেন।