ছাতক প্রতিনিধি ::
ছাতকে সদ্যসমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জাউয়াবাজার ইউনিয়নের জাউয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং-সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও বিজয়ী চেয়ারম্যানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ও সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করা হয়েছে। পক্ষপাতমূলক আচরণ ও ইচ্ছাকৃতভাবে নৌকার ভোট বাতিল করা, ফলাফল সংক্রান্ত ‘ঞ’ ফরম অসমাপ্ত ও ফলাফল প্রকাশে গোপনীয়তা এবং তড়িঘড়ি করে ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ পিটিশন মামলা দায়ের করেন আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম।
বুধবার বিজয়ী চেয়ারম্যান মুরাদ হোসেন (আ.লীগ বিদ্রোহী), চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম (জাপা), এনামুল হক (বিএনপি), বশির আহমদ (আ.লীগ বিদ্রোহী), আল আমিন (স্বতন্ত্র), জাহাঙ্গীর আলম (স্বতন্ত্র), রেজা মিয়া তালুকদার (আ.লীগ বিদ্রোহী), জাউয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত প্রিজাইডিং অফিসার প্রভাষক আব্দুল আহাদ, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার সহকারি শিক্ষক শরিফ মিয়া, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রধান শিক্ষিকা সুরাইয়া বেগম, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমিন, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার সহকারি শিক্ষক রুহুল আমিন, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার প্রধান শিক্ষক সাদ উল্লাহ, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার প্রধান শিক্ষিকা দিলবাহার বেগম, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার প্রধান শিক্ষিকা অর্পণা মল্লিক, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার সিনিয়র শিক্ষিকা শিরিন সুলতানা ও সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা বেগমের বিরুদ্ধে এ পিটিশন মামলা দায়ের করা হয়।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, জাউয়া ইউনিয়নের ১৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে ভোট গ্রহণ, গণনা ও ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে কিন্তু জাউয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোট গণনা ও ফল প্রকাশে প্রিজাইডিং ও সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা ছল-চাতুরির আশ্রয় নিয়েছেন। আ.লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী মুরাদ হোসেনকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা নৌকা প্রতীকের সিলযুক্ত ৩৫০টি ভোট অপ্রত্যাশিতভাবে বাতিল করে দেন। ফলে কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশকারী মুরাদ হোসেনকে মাত্র ৬২ভোটে বিজয়ী দেখিয়ে ফলাফল বিবরণী ‘ঞ’ অপূরণ রেখে কেন্দ্র ত্যাগ করেন নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তারা। ইউনিয়নের ১৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রে মোট বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ২৯৩টি। শুধু জাউয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চেয়াম্যান পদে ভোট বাতিলে সংখ্যা দেখানো হয়েছে ৩৭৯টি। এর মধ্যে নৌকায় সিলযুক্ত ভোটের সংখ্যা ৩৫০টি। চেয়ারম্যান পদে ৩৭৯ভোট বাতিল দেখানোকে ভৌতিক, কারচুপিমূলক, জালিয়াতিপূর্ণ ও অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মুরাদ হোসেনের মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বার্থ রক্ষায় গোপন আঁতাতের মাধ্যমে এ ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত প্রিজাইডিং ও সহকারি প্রিজাইডিং অফিসারগণ ইচ্ছেকৃতভাবে ভোটের বাতিলকৃত তালিকা বৃদ্ধি করেছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীর সাথে প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা ‘অবৈধ আতাত’ করে জাউয়া ইউনিয়নে নৌকাকে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ হয়েছে।
ভৌতিক ও অপ্রত্যাশিতভাবে নৌকার ভোট বাতিলের তালিকায় নিয়ে নৌকার সুনিশ্চিত বিজয়কে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে বলে আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম দাবি করেছেন। তিনি ফলাফল বাতিল, ভোট পুনঃগণনা, প্রকাশিত গেজেটে মুরাদ হোসেনের নাম প্রকাশ হওয়াকে বেআইনি ও বাতিলের দাবি জানান।