অনেক চিকিৎসকদের সেবা নিয়ে রোগীদের মধ্যে নানা হতাশা বিরাজ করে। যদিও চিকিৎসা একটা সেবামূলক পেশা কিন্তু অনেক চিকিৎসকগণ এটাকে সেবামূলক কথাটি বাদ দিয়ে শুধু পেশা হিসেবে দেখছেন। ফলে রোগীরা চিকিৎসকদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সেবা না পেয়ে একের পর এক অন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন। চিকিৎসক এবং রোগীর সম্পর্ক একান্ত আপনজনের মতো হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। রোগী বুক ভরা আশা নিয়ে রোগমুক্তির জন্য চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন। কিন্তু চিকিৎসকের কাছে গেলে সে আশা অনেকক্ষেত্রে দুরাশায় পরিণত হয়। রোগী চিকিৎসকের কাছে খোলামেলা বর্ণনা দিবেন সেটাই স্বাভাবিক। রোগ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসক রোগীকে ভালোভাবে কথা শুনতে হয়। কিন্তু সে সময়টুকু কি চিকিৎসক রোগীকে দিয়ে থাকেন? ফলে চিকিৎসকদের প্রতি রোগীদের বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয়।
তাছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাক্ষাতের জন্য টোকেন সংগ্রহ করতে হয়। তাতেও বিচিত্র নিয়ম-কানুন রয়েছে। এই সুনামগঞ্জেই কোন কোন চিকিৎসকের টিকেট সংগ্রহ করতে গেলে প্রথমেই চিকিৎসকের ভিজিটের অর্ধেক টাকা দিতে হয়। আবার কোন কোন চিকিৎসকের টিকেট তার নিজ চেম্বারে সশরীরে হাজির হয়ে সংগ্রহ করতে হয়।
রোগ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে হলে রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চেম্বারে মাত্র ৫/৬ মিনিট সময় দিয়ে থাকেন। স্বল্প সময়ে দৈনিক ৫০-৬০ জন রোগী দেখে থাকেন চিকিৎসকগণ। উক্ত পরিমাণ রোগীকে পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করে ব্যবস্থাপত্র প্রদান করা হচ্ছে কিনা তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। তাছাড়া চিকিৎসকের দুর্বোধ্য ব্যবস্থাপত্রের জন্য ভুল ওষুধ গ্রহণের ঝুঁকিতে রয়েছেন রোগীরা। আমাদের স্বনামধন্য চিকিৎসকগণ দরিদ্র তথা শ্রমিক শ্রেণির লোকদের প্রতি লক্ষ্য রেখে “ফি” এর পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি না করে বরং তা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা এখন সময়ের দাবি। চিকিৎসকদের সেবা গ্রহণের পদ্ধতি আরো সহজসাধ্য হতে হবে। রোগীদের সুযোগ-সুবিধার কথা চিন্তা করে চিকিৎসকদের সেবার হাত সম্প্রসারিত হওয়ার প্রত্যাশা এটা আমাদের দাবি।