ক্ষুদ্র পুঁজি উন্নয়নের বড় ধরনের ভিত সৃষ্টি করতে পারে। স্বাধীনতার পর ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকিংয়ের পরিবর্তে গণব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল সঞ্চয় সংগ্রহ করে উন্নয়নমূলক খাতে বিনিয়োগ করা।
১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এ বিষয়টির উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় এবং দেশের সর্বত্র গ্রাম পর্যায়ে সব শাখায় ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে ডিপোজিট ব্যাংকিং শুরু করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এতে করেই গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা গড়ে ওঠে।
গ্রামাঞ্চলের মানুষ এখনো ব্যাংকিং সেবার বাইরে। তারা অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকের সুযোগ সুবিধার কথা জানেন না। এমন কি বেসরকারি ব্যাংকগুলো সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাংকিং সেবা নিয়ে যাওয়া, প্রচার-প্রচারণার কৌশল গ্রহণ না করাতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী ব্যাংকিং সেবা নিয়ে তারা এতো কিছু ভাবে না। অথচ ক্ষুদ্র পুঁজি ব্যাংক স্থাপনের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের টার্গেট জনগণকে ব্যাংকিং সুবিধায় আনতে পারলেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। গ্রামে ক্ষুদ্র ও মধ্যমানের ব্যবসায়ী, ছোট ও বড় কৃষি নির্ভর পরিবার এমনকি চাকরিজীবী কৃষিনির্ভর পরিবারের সঞ্চিত টাকা ঘরে অলস পড়ে থাকে। একমাত্র ক্ষুদ্র পুঁজি ব্যাংকের মাধ্যমেই সম্ভব এই টাকার সঠিক ব্যবহার করা। মোট কথা ক্ষুদ্র পুঁজি ব্যাংক চালু হলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সঞ্চয় ও ঋণ প্রবণতা গড়ে ওঠবে। গ্রামের কৃষকদের কাছ থেকে সঞ্চয় সংগ্রহ করে এবং তা জাতীয় অগ্রগতির কাজে বিনিয়োগ করতে পারলে দেশের কল্যাণ সম্ভব।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০০৯-এ দেখা যায়, গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করতে এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সেবা দিতে গ্রামাঞ্চল ব্যাংকগুলোর শাখা খোলার বিধান থাকলেও নানা কৌশলে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো।
ক্ষুদ্র পুঁজি ব্যাংক এক অর্থে আমজনতার ব্যাংকিং সেবা। ক্ষুদ্র পুঁজি ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রামে অর্থপ্রবাহ বাড়ানো, গরিব, মধ্যবিত্ত মানুষের মাঝে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দেয়া, ঋণ তহবিল জোগান এবং গ্রাহকদের কাছে দ্রুত রেমিট্যান্স পৌঁছে দেয়া সম্ভব। ফলে এই ক্ষুদ্র পুঁজিই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে।