1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ১০:৫২ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

প্রসঙ্গ : শিশুর ওজনের ১০ শতাংশের বেশি স্কুলব্যাগ নিষিদ্ধ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

প্রাথমিক স্কুলের শিশুদের শরীরের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ভারী স্কুলব্যাগ বহন নিষেধ করে সুনির্দিষ্ট একটি আইন প্রণয়ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিগোচর করে ওই আইনজীবী অবশ্যই একটি প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে সচেতন মহলের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে, পত্রপত্রিকায় বিশেষজ্ঞদের মতামত পাঠে তা বোঝা যায়। তবে দৃষ্টি আকর্ষণ জরুরি হলো- যাদের উদ্দেশ্যে এই রুল- সরকার ও প্রশাসনের, যারা এ সংক্রান্ত বিধি-নির্দেশ প্রণয়ন করবেন; আর তার চেয়েও বেশি শিক্ষক-অভিভাবক মহলের, যাদের সচেতনতা ও সদিচ্ছাই পারে শিশুদের এই বই বহনের নিপীড়ন থেকে মুক্তি দিতে। আমরা লক্ষ্য করছি দিন দিন শিশুদের পিঠে বইয়ের বোঝা ভারী হচ্ছে। বিশেষ করে বেসরকারি বাণিজ্যিক শিশুবিদ্যালয়ের ব্যাপক প্রসারের সঙ্গে সঙ্গেই এই প্রবণতাও বেড়েছে। স্কুলে অনেক কিছু অনেক বেশি পড়ানো হয়, শেখানো হয়, এটা বুঝাতে শিশুদের নির্ধারিত পাঠ্যসূচির বাইরেও অনেক ধরনের বই পড়া বাধ্যতামূলক করে দেয় ওইসব স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া এর সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাপারও রয়েছে। যতগুলো বই তার চেয়ে বেশি খাতা। যে স্কুল যত নামীদামি তার বই-খাতার বোঝা তত ভারী। বাধ্য হয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের এই বোঝা বই বহন করতে হয়। অনেক অভিভাবকেরও এমন ধারণা যে সন্তানের বোঝা যত ভারী হয়, শিক্ষাও বোধহয় সে অনুপাতেই বেশি হয়। সবাই যে একরকম ভাবেন তাও নয়, শিশুর পিঠে এত বড় বইয়ের বোঝা তুলে দিতে অনেক অভিভাবকেরই প্রাণ কাঁদে। কিন্তু তারা নিরুপায়, স্কুলের নির্দেশ মানতেই হবে। শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনের পর দিন ভারী ব্যাগ বইলে শিরদাঁড়ার স্বাভাবিক অবস্থান নষ্ট হয়ে যায়। চাপ পড়তে পড়তে দুই হাড়ের মাঝখানে নরম পদার্থ শুকিয়ে যায়। এতে দীর্ঘস্থায়ী পিঠে ব্যথা, পিঠ বেঁকে যাওয়া, হাড়ে ফাটল ধরা ও শিশুর ঠিকমতো বেড়ে উঠতে না পারার মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এসব বিষয়টি নিয়ে সচেতন মহল বেশ দিন থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। কিন্তু এসবের তেমন কোনো প্রভাব শিক্ষক-স্কুল কর্তৃপক্ষ কিংবা অভিভাবকদের মাঝে দৃশ্যমান হয়নি। স্কুল ব্যাগ বহনের নামে শিশুদের শারীরিক-মানসিক নির্যাতন চলছেই। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদালতের গোচরে আনা হয়েছে। আদালত এ ব্যাপারে রুল জারি করেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় তার জবাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। কোমলমতি শিশুদের কাঁধে মাত্রাতিরিক্ত বইয়ের বোঝা চাপানোর মতো একটি অমানবিক ব্যাপার বন্ধ হওয়া উচিত এ ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত থাকার সুযোগ নেই। এটা বন্ধ করতে হবে। কিভাবে করা যাবে সেটাই বিষয়। এ ব্যাপারে কি আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে? বিষয়টি যেহেতু সামনে এসেছে তাই সরকারের উচিত স্বউদ্যোগেই দ্রুত এ ব্যাপারে নির্দেশনা জারি করা। আর আদালতের রায় কিংবা সরকারের নির্দেশনার জন্য বসে না থেকে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে স্কুল কর্তৃপক্ষের উচিত শিক্ষার্থীদের বই-খাতার ভার লাঘবে উদ্যোগী হওয়া। বেসরকারি স্কুলের এসোসিয়েশনগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে উদ্যোগ নিতে পারে। অভিভাবকদেরও এ ব্যাপারে সচেতন ও সরব হওয়া দরকার। আমরা চাই, এ দেশের শিশুরা বই-খাতার বোঝা বহনের নিপীড়ন থেকে দ্রুত মুক্তি পাক। এ ব্যাপারে শিক্ষক অভিভাবকরা সচেতন হতে হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com