একটি দেশের সবচেয়ে বড় স¤পদ সে দেশের যুব সমাজ। যুব সমাজ যদি মাদকে আসক্ত হয়, নানা অবক্ষয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে তবে সে দেশের উন্নয়ন-সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত হতে পারে না। জাতির ভবিষ্যত সমস্যাসংকুল ও অনিশ্চিত হতে বাধ্য। ইদানিংকালে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সুনামগঞ্জের যুব সমাজের মধ্যে মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা বাড়ছে।
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়Ñ জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে জগন্নাথপুর পৌর এলাকার ভবানীপুর গ্রামের বুলাকি রবি দাসের ছেলে মোহন লাল রবি দাস, উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের কুবাজপুর গ্রামের মৃত দয়াল রবি দাসের ছেলে হরিচরণ রবিদাস, পুরন রবি দাস ও এক নারীসহ ৪ মদ ব্যবসায়ীকে দন্ড দেয়া হয়েছে। এর আগের দিন ৫ ডিসেম্বর ‘মাদক বিক্রেতা গ্রেফতার’ ও ‘মদসহ যুবক আটক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। শুধু ৫, ৬ ডিসেম্বরই নয়, প্রায় প্রতিদিনই মাদক ব্যবসায়ী বা মাদকসেবীর কারাদন্ডের সংবাদ চোখে পড়ে।
আমরা মনে করি, সমাজে অন্যায়-অপরাধ কমানো, সমাজকে নিরাপদ বাসযোগ্য রাখতে বা দেশের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হলে মাদকের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াই ও বিজয় অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। দেশ ও সমাজকে মাদক মুক্ত করতে হলে মাদকের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে হবে, মাদকের চলাচল বিপণন ও বিক্রি বন্ধ করতে হবে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। মাদকের আগ্রাসন থেকে মুক্তির জন্য শুধু প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থাই যথেষ্ট নয়, সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলাও জরুরি। প্রতিরোধের জন্য সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিই পূর্বশর্ত। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক, সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিতে হবে। সব বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে মাদকের ধ্বংসাত্মক ক্ষতিকর দিক তুলে ধরাতে হবে। সরকারকে মাদকবিরোধী কার্যক্রম আরো জোরদার করার পাশাপাশি সীমান্ত পথে মাদক চোলাচালান বন্ধসহ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান পরিচালনা করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।