খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি, ছিনতাইসহ যেকোনো ধরনের অপকর্মই একটি দেশের জন্য উদ্বেগের বিষয় তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। আর যদি তা একের পর এক ঘটতে থাকে, তবে রাষ্ট্র কঠোরভাবে হলেও এসব কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তার অবস্থান ব্যক্ত করবেÑ প্রতিহত করবে যে কোনো অন্যায় ও অনাচার এটাই প্রত্যাশিত।
গতকাল দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদ পাঠে জানা যায়Ñ ‘পরিবারের লোকদের অবর্তমানে বসতঘরে ঢুকে সদর উপজেলার সাহেবনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি পড়–য়া এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা করেছে এলাকার প্রভাবশালী পরিবারের এক বখাটে। শিশুটির আর্তচিৎকারে পরিবারের লোকজন এগিয়ে আসলে ওই বখাটে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে শ্লীলতাহানির শিকার মেয়েটিকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেয়া হয়।
ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনা একটি সামাজিক ব্যাধিও বটে। যারা ধর্ষণ করছে তারা যে কতটা বিকৃত মানসিকতার সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই সামাজিক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে একদিকে যেমন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তৎপর হতে হবে। আইনি আওতার অধীনে এনে দোষীদের বিচার করতে হবে, কঠোর শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি ধর্ষণ নামক ব্যাধির বিরুদ্ধে সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এখনও সচেতন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের জন্য সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলা সবার দায়িত্ব। তাদের বিকাশের পথ যদি রুদ্ধ হয়, বেড়ে উঠার সুন্দর পরিবেশ যদি না পায়, তারা যদি বিভিন্নভাবে শারীরিক, মানসিক নির্যাতনের শিকার হয় তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ঘুণে ধরা আসবাব যেমন একদিন ভেঙে পড়ে, তেমনি সমাজও ভেতর থেকে ক্ষয়ে গেলে তার বাইরে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। ছোটদের মানুষ হওয়ার প্রাথমিক শিক্ষাটি দেয় পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন শিথিল হয়ে গেলেই দিকনির্দেশনার অভাবে উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েরা আদর্শচ্যুত হয়। তাই অধঃপতন ঘটলে এর দায় পরিবার বা সমাজ-কেউই এড়াতে পারে না। এ জন্য সমাজে সকল ধরনের অপকর্ম প্রতিহত করতে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।