মতিউর রহমান ::
২৫ নভেম্বর শুক্রবারে প্রকাশিত ‘দৈনিক সুনামগঞ্জের খবর’-এর একটি সংবাদে দেখলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এটুআাই প্রোগ্রাম ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে জেলা ব্র্যান্ডিং বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহ¯পতিবার বিকেলে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্সে জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, যুব সমাজের প্রতিনিধি, চেম্বার প্রতিনিধি, মিডিয়া, নারী সমাজের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামের কর্মকর্তা আব্দুল মান্নানসহ অন্যান্যদের উদ্দেশে সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য তুলে ধরে সুন্দর বক্তব্য রাখেন।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও সবাই বক্তব্য রাখেন। আলোচকরা ধান ও মাছকে প্রাধান্য দিয়ে গলাকাটা উচ্চমূল্যের মাছ চিতলকে ব্র্যান্ডিং পণ্য করা যেতে পারে বলেও কেউ কেউ আলোচনা করেন।
যারা মন্তব্য করেছেন তাদের কাছে সবিনয় প্রশ্ন করছি, আচ্ছা বলুনতো মহোদয়রা কতদিন আগে চিতল খেয়েছেন?
অবশ্য আপনারা চিতলের কোপ্তা খেয়ে রসনা তৃপ্ত করতে পারেন। কারণ উপরওয়ালা আপনাদের সৌভাগ্যবান করে সৃষ্টি করেছেন।
আমি নিজে তিন বছর আগে একটি চিতল খেয়েছিলাম বলে মনে পড়ে। বলতে পারেন, আমি একজন হাড় কিপ্টে অথবা চিতল খাওয়ার সামর্থ্যবান মানুষ নই।
এক ছেলে বিদেশে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করে, দুই ছেলে উচ্চ বেতনে চাকরি করে। তারা প্রতি মাসে আমাকে খরচের টাকা দেয়।
জমি-জমার আয়, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়েও ১৪০০ টাকা কেজির চিতল খাওয়ার সাহস করি না।
সমাজের কয়েকজন ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদকে জিজ্ঞেস করলাম তারা কী নিয়মিত চিতল মাছ খান?
তাদের উত্তরও আমার মতোই!
জাসদ নেতা আ.ত.ম সালেহ বলেন, কবে চিতল খেয়েছেন মনে নেই।
মুক্তিসংগ্রাম ট্রাস্টের স¤পাদক বলেন, টাঙ্গুয়া হাওরের এককালীন ইজারাদার মরহুম জয়নাল আবেদীন সাহেব জীবিত থাকতে উনার দেওয়া চিতল মাঝেমাঝে খেতেন।
সুনামকণ্ঠ স¤পাদক বিজন সেন বলেন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময় চিতল খেয়েছিলেন।
প্রথিতযশা কবি ইকবাল কাগজীকে জিজ্ঞেস করলে বলেন, ঙহপব ঁঢ়ড়হ ধ ঃরসব খেয়েছি বলে মনে পড়ে। তবে ছোটবেলায় প্রচুর খেয়েছি।
কৃষকলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মতিন বলেন, কবে চিতল খেয়েছি মনে নেই।
এই যদি হয় রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীদের চিতল খাওয়ার অবস্থা হয় তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা বুঝুন।
ব্র্যান্ডিং করতে গিয়ে চিতল ব্যবহার করা আর পরিহাস করা সমার্থক।
সম্মানিত সুধীজন, আপনাদের বিদ্যা-বুদ্ধি আমার মতো অর্ধ শিক্ষিতের চেয়ে শতগুণ বেশি। একটু চিন্তা করুন…।
সম্মানিত জেলা প্রশাসক মহোদয়, শুনেছি সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। শুনেছি পুকুরের চিতল নাকি সস্তা, কিন্তু দেখতে একইরকম। যদি দেখার মধ্যে ব্যবধান থাকতো তাহলে অবশ্য ব্র্যান্ডিং করা যেতো। আপনার ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সুবিবেচনার উপর ছেড়ে দিয়ে এখানেই শেষ করলাম।