1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বাল্যবিবাহ বন্ধ না হলে নারীর যথার্থ ক্ষমতায়ন হবে না

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৬

দেশের উন্নয়নের চিত্র পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দারিদ্র বিমোচনসহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ অনেকাংশে এগিয়ে গেছে; যা দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে ইতিবাচক। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে এগিয়ে গেলেও বাল্যবিবাহ রোধে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে রয়েছে। আয়তনের তুলনায় বাংলাদেশের জনসংখ্যা অনেক বেশি, যা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে বাল্যবিবাহের কারণে নানামুখী সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণেও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সমাজবিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ থেকে বলা যায় বাল্যবিবাহ কোন পৃথক সমস্যা নয়। একে দেখতে হবে সামগ্রিকভাবে অন্য সব সামাজিক সমস্যার অংশ হিসেবে। দারিদ্র, নিরাপত্তাহীনতা, নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন, পুঁজিবাদের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে সৃষ্ট সামাজিক ব্যাধি, নারী পাচার, মাদক ব্যবসা, সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এসবই দায়ী এর জন্য। এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান না করে কেবল বাল্যবিবাহ বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব বলেই মনে হয়। তবে গ্রামবাংলায় মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে বাল্যবিবাহের হার কমে আসবে বলে ধারণা করা যায়।
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদ শিরোনাম ছিল ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন : মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮’। সংবাদ পাঠে জানা যায়Ñ বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলেদের বয়স ২১ ও মেয়েদের বয়স ১৮ বছরের বিধান রেখে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৬’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তবে ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোনো নারীর সর্বোত্তম স্বার্থ, আদালতের নির্দেশ ও পিতা-মাতার সম্মতিতে বিধিসম্মত উপায়ে বিয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে বলেও আইনে উল্লেখ রয়েছে। মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮-ই আছে, পুরুষদের ক্ষেত্রে ২১। ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোনো নারীর সর্বোত্তম স্বার্থে আদালতের নির্দেশনাক্রমে মাতা-পিতার সমর্থনে বিয়ে হলে এ আইনের অধীনে অপরাধ হবে না। নতুন আইনে বাল্যবিবাহের শাস্তি ও জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। আদালত স্ব-উদ্যোগে কিংবা কারো অভিযোগে এমন বিয়ে স্থগিত রাখতে পারবেন। আবার তা প্রমাণের পর প্রত্যাহর করতে পারবেন।’
বাল্যবিবাহ রোধে জনসাধারণের সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি সরকার ও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। বাল্যবিবাহ রোধে যে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে সে আইনটির যথার্থ প্রয়োগ করতে হবে। আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে বাল্যবিয়ের প্রবণতা কমে আসবে। দেশ থেকে বাল্যবিবাহ একদিন, দু’দিনে দূর করা যাবে না। রাষ্ট্র অর্থাৎ সমাজ, পরিবার, স্থানীয় প্রশাসন এবং সরকারের সমন্বিত উদ্যোগে সেটা বন্ধ করতে হবে। সকল গণমাধ্যমে এ ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বাল্যবিবাহ নামক সামাজিক ব্যাধি দূর করতে হলে এর বিকল্প নেই। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে না পারলে নারীর ক্ষমতায়নও যথার্থ হবে না।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com