গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, বিগত বছর ও চলতি বছরের জেলার বিভিন্ন এলাকায় দায়েরকৃত মামলাসমূহের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক মামলার নি®পত্তি করেছে সুনামগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যতিক্রমী ও কার্যকর কিছু পদক্ষেপে গত ১৬ মাস সময়ের মধ্যে ১২ হাজার ২৯১টি মামলার নি®পত্তি হয়েছে। ২০১৫ সালের ১ জুলাই জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসিতে বিচারাধীন মামলা ছিল ১১ হাজার ২৬টি। ওই সময় থেকে চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর সময়ের মধ্যে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসিতে দায়ের হয় আরও ৮ হাজার ৮৩টি মামলা। মোট ১৯ হাজার ১০৯টি মামলার মধ্যে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-এর গৃহীত কার্যকর কিছু পদক্ষেপের কারণে ১৬ মাসে ১২ হাজার ২৯১টি মামলা নি®পত্তি করা হয়েছে। মূলত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যতিক্রমী ও কার্যকর কিছু সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা তাঁকে আন্তরিক সাধুবাদ জানাই।
অপরাধ, অপরাধী এবং বিচার শব্দগুলো একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। অপরাধ করে কেউ যদি বিচারের সম্মুখীন না হয়, কৃত অপরাধের জন্য যদি শাস্তি ভোগ না করে তবে সে একই অপরাধ বারবার করবে। একইভাবে বিচার প্রক্রিয়া যদি ঝুলে থাকে, দীর্ঘমেয়াদী সময় পার করে তবে সে ক্ষেত্রে অপরাধী নিজেকে মুক্ত করার সুযোগ বের করে নিতে পারে। আবার বিচারপ্রার্থীর মধ্যে হতাশা কাজ করে। সে ক্ষেত্রে অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করতে হলে আইনের প্রতিটি ধারা অনুসরণ করে মামলার নি®পত্তি দ্রুততর করার উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের দেশে মামলাজটের বিষয়টি নতুন নয়। এর অনেক যৌক্তিক কারণ রয়েছে এটা যেমন ঠিক তেমনি আন্তরিকতা থাকলে সীমিত সাধ্যের মধ্যেও যে পাহাড়সম জট পাড়ি দেয়া যায় এমন প্রমাণ রাখছে বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালত। সুনামগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
আমরা মনে করি, যত দ্রুত মামলার নি®পত্তি ঘটবে, তত বেশি অপরাধীর বিচার নি®পত্তি হবে। এতে অপরাধীরাও যে কোনো অপরাধ সংঘটনের আগে সতর্ক থাকবে। অপরাধমূলক কর্মকান্ড থেকে নিজেকে দূরে রাখার প্রচেষ্টা চালাবে। চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাজট কমছে এটি ইতিবাচক একটি সংবাদ। বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের আন্তরিক প্রচেষ্টাই বিচারিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব এনে দিয়েছে বলা যায়। নিঃসন্দেহে এর সুপ্রভাব পুরো বিচার বিভাগে পড়বে এবং বিচার প্রত্যাশী সাধারণ জনগণ নতুন করে ভরসা করতে শুরু করবে। এতে সমাজে আইন হাতে তুলে নেয়ার প্রবণতাও কমে আসবে।