অর্থনীতিতে বাংলাদেশ যত এগিয়ে চলছে, ততই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের চাহিদা এবং গুরুত্ব বাড়ছে। নগরায়ন ও শিল্পায়নের সঙ্গে অগ্নিঝুঁকিও বেড়ে উঠছে। তাছাড়া ভূমিক¤পসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি রয়েছেই। এমন অবস্থায় ফায়ার সার্ভিস বিভাগকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে তোলার কোনো বিকল্প নেই। সরকারও এর পক্ষে নীতিগত অবস্থান নিয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষার উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। গতি, সেবা ও ত্যাগের মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে শুরু করে এর কার্যক্রম। এ বিভাগের কর্মীরা অগ্নি নির্বাপণ, অগ্নি প্রতিরোধ, উদ্ধার, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান, মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে প্রেরণ ও দেশি-বিদেশি ভিআইপিদের অগ্নি নিরাপত্তা বিধান করে থাকে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এই পেশার সঙ্গে জড়িত কর্মীদের উদ্ধার তৎপরতা ও বিপদে এদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার মানসিকতা উদাহরণযোগ্য।
গতকাল দৈনিক সুনামকণ্ঠে ‘প্রত্যেক উপজেলায় নির্মাণ হচ্ছে ফায়ার স্টেশন’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। সংবাদে বলা হয়েছেÑ ‘২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে ১৫৬ ফায়ার স্টেশন সিভিল ডিফেন্স স্থাপন প্রকল্পের আওতায় সুনামগঞ্জের আরও ৬টি উপজেলায় ফায়ার স্টেশন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ভূমি জটিলতার কারণে ধর্মপাশা, তাহিরপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু করা না গেলেও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জামালগঞ্জ ও শাল্লা উপজেলায় নির্মাণ কাজ অর্ধেকেরও বেশি শেষ হয়ে গেছে।
দুটি প্রকল্পে সুনামগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলা ফায়ার স্টেশন নির্মাণ কাজ চলছে। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে অন্য দুটি ফায়ার স্টেশনের কাজ নির্ধারিত সময়ে শুরু করা যায়নি। আগামী বছরের জুনের আগে ৫টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাজ স¤পন্ন হবে। আরো দুটি প্রকল্পে সুনামগঞ্জের ৮টি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হলেও ভূমি জটিলতার কারণে তিনটি স্টেশনের কাজ শুরু করা যায়নি। দুটি স্টেশনের কাজ প্রায় ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। বাকি তিনটির কাজ অর্ধেকেরও বেশি স¤পন্ন হয়েছে।’
আমরা মনে করি, এসব ফায়ার স্টেশন চালু হলে উপজেলা পর্যায়ের যোগাযোগ আছে এমন প্রত্যন্ত গ্রামও সহজে ফায়ার সার্ভিস এন্ড ডিফেন্স স্টেশনের অগ্নিনির্বাপক সহযোগিতার আওতায় আসবে। এতে ক্ষয়-ক্ষতিও কমবে। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে উপযুক্ত সংখ্যায় নতুন ফায়ার স্টেশন নির্মাণ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই স¤পন্ন করতে হবে। ২৫ ফায়ার স্টেশন ও ১৫৬ ফায়ার স্টেশন সিভিল ডিফেন্স স্থাপন প্রকল্পে জেলার ৫টি উপজেলা ফায়ার স্টেশন নির্মাণ কাজ সব সমস্যার সমাধান করে অচিরেই বাস্তবায়ন হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।