মানুষের স্বাস্থ্য সমস্যার অন্যতম প্রধান একটি সমস্যা ডায়াবেটিস। এ রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্বে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪২ কোটি ২০ লাখ। বিশ্বে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থাৎ বিশ্বে প্রতি ১১ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ১৯৮০ সালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ১০ কোটি ৮০ লাখ। অর্থাৎ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় চার গুণ বেড়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ৮ শতাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। পুরুষের মধ্যে এর পরিমাণ ৮ দশমিক ৬ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে স্বাভাবিকের চাইতে বেশি ওজনের মানুষের সংখ্যা ১৭ শতাংশ। পুরুষদের মধ্যে এর পরিমাণ ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ। দেশের ডায়াবেটিস নিয়ে কৌশল ও কর্মসূচি থাকলেও ওজন বৃদ্ধি ঠেকানোর জন্য এমন কোনো ব্যবস্থা নেই। তা ছাড়া ডায়াবেটিস ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ডায়াবেটিসের ওষুধ দেশে খুব বেশি সহজলভ্য নয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, ডায়াবেটিস একটি নীরব রোগ। ডায়াবেটিস থেকে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, অন্ধত্ব, কিডনি বিকল হওয়ার মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হতে পারে। ডায়াবেটিস থাকলে এসব রোগের ঝুঁকি ১০ থেকে ২০ গুণ পর্যন্ত বেশি থাকে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি ও শারীরিক পরিশ্রম না করাকে ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে। এর বিপরীতে সুষম খাদ্য গ্রহণ, শারীরিক পরিশ্রম, অতিরিক্ত ওজন না হতে দেয়া, সন্দেহ হলে রক্তে শর্করার পরিমাণ পরিমাপ করা এবং নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। এজন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে হবে। ওজন বৃদ্ধি যাতে না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অন্যদিকে সরকারকেও এই বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। জনগণ যেন স্বাস্থ্য রক্ষার সুযোগ পায় এবং তাদের রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার সুব্যবস্থা থাকে সে দিকে নজর দিতে হবে।