স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জের নবাগত পুলিশ সুপার এম.এন মোর্শেদ, পিপিএম (সেবা)-এর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় পুলিশ সুপার কার্যালয় মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম খান।
সভায় গণমাধ্যমকর্মীরা বলেন, সদর উপজেলার ডলুরা বর্ডার হাট, দোয়ারাবাজার উপজেলার রিংকু বর্ডার হাট, লাউড়েরগড় বর্ডার হাটে দালালচক্রের আনাগোনা চলছে। এসব বর্ডার হাটের দুই মিলন খান ও আরেফিন নামের ব্যক্তি বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা প্রকাশ্যে টাকা উত্তোলন করেন। কতিপয় সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তিরা চিনি ও চিনি চোরাচালানীর সঙ্গে জড়িত আছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মত প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্ট্যাশন এলাকায় যানবাহন সংগঠনের শ্রমিক নেতারা চাঁদা উত্তোলন করে আসছেন। ধোপাজান চলতি নদীতে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। একই সাথে চলছে চাঁদাবাজি। বিভিন্ন এলাকায় নৌপথে চাঁদাবাজি ও বিআইডব্লিউটিএর নামে চাঁদাবাজির প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
গণমাধ্যমকর্মীরা বলেন, শহরের বিভিন্ন পার্কে ও পয়েন্টে ইভটিজিং হচ্ছে। বখাটেদের উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরের বড়পাড়া, হাছননগর, তেঘরিয়া, মুহাম্মদপুর এলাকা মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। চুরির প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে সকল স্থানে।
তারা বলেন, অনলাইন মিডিয়ায় লেখালেখির মাধ্যমে প্রায়ই গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ফেইসবুক থেকেও গুজব ছড়ানো হয়। এটার প্রতিকার জরুরি প্রয়োজন।
তারা আরও বলেন, বিট-পুলিশিং কমিটির এখন তৎপরতা নেই। ঝিমিয়ে পড়েছে কার্যক্রম। এই কমিটিতে যাচাই-বাছাই করে ভাল মানুষ যুক্ত করা উচিত বলে মতামত ব্যক্ত করেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নবাগত পুলিশ সুপার এম.এন মোর্শেদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অথবা অনলাইন মিডিয়ায় লেখালেখি করে কেউ গুজব ছড়ালে তাকে ছাড় দেয়া হবে না।
পুলিশ সুপার বলেন, সুনামগঞ্জে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সব সময় চেষ্টা চালানো হবে। যদি অতীতে শাল্লার মতো কোনো স্থানে কোনো ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে আমাদের পুলিশ বাহিনী কড়া নজর রাখবে।
তিনি বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় হাট-বাজারে কোনো অপরাধ হলে তা খতিয়ে দেখা হবে। চোরাচালান বন্ধে, নৌপথে ও সড়ক পথে চাঁদাবাজি বন্ধে, মাদক, জুয়া, কিশোরগ্যাং ও ইভটিজিং বন্ধে পুলিশের নজর থাকবে সকল স্থানে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাংবাদিকতার নামে কেউ কোনো অপরাধের সাথে জড়িত থাকলে কাউকেও ছাড় দেয়া হবে না। অপরাধ যত স্থানে ঘটার আশঙ্কা থাকবে, পুলিশ তা খবর রাখবে এবং প্রতিরোধের ব্যবস্থা করবে। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সুনামগঞ্জে আমি শূন্য হাতে এসেছি। শূন্য হাতে ফিরে যাবো। আমি জনগণের সেবক হিসাবে এসেছি। জনগণের সেবা করবো। আপনারা আমাকে এবং আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন। এটাই আমার প্রত্যাশা।
এসময় বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক সুনামগঞ্জের ডাক সম্পাদক ও প্রকাশক অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ, দৈনিক সুনামগঞ্জের সময় স¤পাদক সেলিম আহমদ, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদকী হিমাদ্রী শেখর ভদ্র, মোহনা টিভির প্রতিনিধি কুলেন্দু শেখর দাস, সাংবাদিক মাসুম হেলাল, মাহবুবুর রহমান পীর, ফরিদ মিয়া, তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ, সিরাজুল ইসলাম শ্যামল, মো. জসিম উদ্দিন, মো. আমিনুল হক, কর্ণ বাবু দাস প্রমুখ।