শহীদনূর আহমেদ ::
সুনামগঞ্জে এবার বোরো ধানের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন হওয়ায় অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। গেল ৭ মে থেকে একযোগে জেলার ১২ উপজেলায় ১ হাজার ২৮০ টাকা মণ দরে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করছে খাদ্য বিভাগ। প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ধানের জন্য ৭ মে থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত নির্ধারিত সময় বেধে দিলেও নির্দিষ্ট সময় সীমার দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক ধানও ক্রয় করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩২% ধান সংগ্রহ করা গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বাকি দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিলেও খাদ্য বিভাগ জানিয়েছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ পূরণ করা যাবে।
এদিকে বন্যা ও প্রতিকূল আবহাওয়ায় গুদামে সরকারিভাবে ধান বিক্রিতে কৃষকের অনীহা লক্ষ করা গেছে। এছাড়াও খাদ্যগুদামে নানা বিড়ম্বনা ও দুর্গম যাতায়াত ব্যবস্থা ধান সংগ্রহ কার্যক্রমে প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন সাধারণ কৃষকরা। এমন পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হবেন বলে মনে করে কৃষক ও হাওরের সংগঠন হাওর বাঁচাও আন্দোলন।
জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এবার জেলায় সরকারিভাবে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২৯ হাজার ৮১১ মেট্রিক টন। ৩২ টাকা কেজি এবং ১২৮০ টাকা মণ দরে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ শুরু হয় ৭ মে থেকে। গেল দুই মাসে ১২ উপজেলায় ৯ হাজার ৬৫৫ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ হয়েছে যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৩২.৩৯% বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি সময় দুর্যোগকালীন আবহাওয়া, বন্যা পরিস্থিতির কারণে ধান ক্রয় কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম ভুঞা। তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ দুই দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের খাদ্যগুদামগুলো পানিতে আক্রান্ত হয়েছে। কৃষকরা প্রতিকূল আবহাওয়ায় আতঙ্কিত থাকেন। তারা ধান নিয়ে আসতে ভয় পান। একারণেই ধান ক্রয় কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। তবে, সামনে আর কোনো প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা না থাকলে ধান সংগ্রহ গতি বাড়ানো হবে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ স¤পাদক বিজন সেন রায় বলেন, প্রতি বছর ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় না। এবারও লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হবে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তবে, অন্য সময় বিভিন্ন কারণ থাকলেও এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক কারণও থাকবে বলে জানান তিনি।