সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বিশ্বজুড়ে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে চলতি বছরের জুন মাসকে সবচেয়ে উষ্ণতম মাস হিসেবে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ পরিষেবা প্রতিষ্ঠান কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস। গত সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ুবিষয়ক এই সংস্থাটি তাদের মাসিক বুলেটিনে বলেছে, নানা সূচকের সাপেক্ষে ২০২৪ সালকে বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হিসেবে চিহ্নিত হতে যাচ্ছে।
কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস তাদের বুলেটিনে বলেছে, ২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত, এই ১৩ মাসে সবচেয়ে বেশি উষ্ণতম মাস ছিল চলতি বছরের জুন মাস। এ সময় গত বছরের জুন মাসের তুলনায়ও রেকর্ড তাপমাত্রা সহ্য করেছে বিশ্বের বিভিন্ন এলাকাবাসী। এছাড়া গত এক বছরে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ছিল আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত যে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, তার তুলনায় এই তাপমাত্রা ১ দশমিক ৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০২৪ সাল বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হিসেবে ২০২৩ সালকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। তারা বলছেন, এল নিনোর কারণেই এই দুবছর তাপমাত্রা রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। তবে মানুষের সৃষ্ট নানা কারণও পৃথিবী উত্তপ্ত করছে দিন দিন।
মার্কিনভিত্তিক তাপমাত্রা বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান বার্কলে আর্থের বিজ্ঞানী জেকে হাউসফাদার বলেন, ২০২৩ এবং ২০২৪ সাল সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৫ শতাংশ।
অতিরিক্ত গরম এবং পরিবর্তিত জলবায়ু ইতিমধ্যে চলতি বছর বিশ্বজুড়ে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে গত মাসে হজযাত্রার সময় প্রচ- গরমে এক হাজারের বেশি হজযাত্রী মারা যায়। এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়াতেও তীব্র গরম ছিল গত জুন মাসে। অতিরিক্ত গরমে হিট স্ট্রোকে প্রচুর মানুষ মারা গিয়েছেন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানে। লক্ষাধিক মানুষ বমি, ডায়রিয়া, তাপ ক্লান্তি, মাথাব্যথা, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, পানিশূন্যতা ইত্যাদি সহ বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যায় পড়েছেন।
ই¤েপরিয়াল কলেজ লন্ডনের গ্র্যানথাম ইনস্টিটিউটের জলবায়ুবিজ্ঞানী ফ্রেডেরিক ওটো বলেন, ২০২৪ সাল ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হওয়ার সর্বোচ্চ সম্ভাবনা আছে। তিনি আরও বলেন, এল নিনো একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। এটি আসবে আর যাবে। আমরা জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লা পোড়ানো বন্ধ করতে পারি।