শহীদনূর আহমেদ ::
সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। দুই দফায় মিলে টানা তিন সপ্তাহ বানের জলে যুদ্ধ করছেন জেলার সদর, বিশ্বম্ভরপুর, শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, তাহিরপুরসহ ৭ উপজেলা হাওর ও নদীতীরবর্তী নি¤œাঞ্চলের অন্তত ৫ লাখ মানুষ। বন্যার পানি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকায় জলাবদ্ধতার কবলে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষজন। বাড়িঘর, রাস্তাঘাটে পানি থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন বন্যা কবলিত এলাকার নারী, শিশু ও বয়স্ক সদস্যরা। গবাদিপশু ও হাঁসমুরগী নিয়ে বিপাকে রয়েছেন বানভাসিরা। এদিকে বন্যার পঁচা-গলা পানিতে বন্যার্ত এলাকায় দেখা দিয়েছে চর্মরোগ ও পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব। কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন নি¤œআয়ের মানুষজন। আয় উপার্জন না থাকায় খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন পানিবন্দী পরিবারের লোকেরা। যাঁরা বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছেন তারাও খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে কষ্ট করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের সহায়তার কথা বলা হলেও বেশিরভাগ পরিবার সহায়তার বাইরে থাকছে বলে অভিযোগ বানভাসিদের। ক্ষয়ক্ষতির নিরূপণ করে পুনবার্সনে আওতায় আনতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, উজানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জের নদী তীরবর্তী ও হাওর এলাকায় আরও কিছুদিন বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকবে। বৃষ্টিপাত না হলে ধীরে ধীরে সমতলের পানি হ্রাস পেয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি শহরের নবীনগর পয়েন্টে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত হলে নদীর সমতল বাড়ে আবার বৃষ্টিপাত না হলে সমতল হ্রাস পায়। এতে করে নি¤œাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী। তিনি বলেন, ত্রাণের কোনো ঘাটতি নেই। প্রয়োজন অনুসারে ত্রাণ তৎপরতা চালানো হচ্ছে। পানি কমলে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করার কথা জানান তিনি।