শহীদনূর আহমেদ ::
ভুয়া ও জাল সনদপত্রে আইনজীবী সহকারী হয়ে আদালতে বিচারপ্রার্থীদের সাথে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে আব্দুল ওয়াহিদ বাবুল নামের এক আইনজীবী সহকারীর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি সুনামগঞ্জ আইনজীবী সমিতি ও আইনজীবী সহকারী সমিতি বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন আলাল উদ্দিন নামের ভুক্তভোগী এক বিচারপ্রার্থী। আলাল উদ্দিন জামালগঞ্জ উপজেলার চানপুর গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযোগ উল্লেখ করা হয়, সুনামগঞ্জ আদালতে আইনজীবী সহকারী হিসেবে কর্মরত সদর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল ওয়াহিদ বাবুল দীর্ঘদিন ভুয়া ও জাল এসএসসি সনদপত্রের মাধ্যমে এডভোকেট ক্লার্ক কার্ড ইস্যু করে বিচারপ্রার্থী মোয়াক্কেলদের সাথে প্রতারণা করে আসছেন। আব্দুল ওয়াহিদ সুনামগঞ্জ আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট ফারুক আহমদের সেরেস্তায় ৩৪৪ নং কার্ড করে পরবর্তিতে সুনামগঞ্জ আইনজীবী সহকারী সমিতির সদস্য ভুক্ত হন। অ্যাডভোকেট ফারুক আহমদের সেরেস্তা হিসেবে কাজ করার অঙ্গীকার থাকা সত্ত্বেও অমান্য করে অ্যাডভোকেট কুশল রাজের অধীনে কাজ করতে থাকেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আব্দুল ওয়াহিদ সেরেস্তা হওয়ার সুযোগে আদালতে বিচারপ্রার্থীদের বিভিন্ন মামলার রায় পাইয়ে দেবার নাম করে মিথ্যা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে টাকা পয়সা আত্মাসাত করতে থাকেন। এই ভাবে বিচারপ্রার্থী একাধিক ব্যক্তিকে হয়রানি ও প্রতারণার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
বিচারপ্রার্থীর পৃথক দুইটি অভিযোগের পর নড়েচড়ে বসে আইনজীবী সহকারী সমিতি। অভিযুক্ত আব্দুল ওয়াহিদকে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবরে তার শিক্ষাগত এসএসসি’র সনদপত্র দাখিল করতে দুইটি লিখিত নোটিশ প্রদান করেন সংশ্লিষ্টরা। নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে সনদপত্র মূল কপি দাখিলের কথা থাকলেও নির্ধারিত সময় ক্ষেপণ করে ২০২২ সালের বন্যায় সনদপত্র নষ্ট হয়েছে মর্মে সংগঠন বরাবরে জবাব দিলে এতে সন্তোষজনক জবাব না পেয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে জরুরি সাধারণ সভার আহ্বান করে জেলা আইনজীবী সহকারী সমিতি। সাধারণ সভায় সনদপত্র দাখিলে আরও ৭ দিন সময়ে বাড়িয়ে দেয়া হলেও উল্লেখিত সময়ের মধ্যে সনদপত্র প্রদানে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে সুনামগঞ্জ আইনজীবী সহকারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন বলেন, আলাল উদ্দিন নামের এক বিচারপ্রার্থী আইনজীবী সহকারী আব্দুল ওয়াহিদের শিক্ষাগত সনদপত্র ও হয়রানির ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি একই অভিযোগ আইনজীবী সমিতির কাছেও করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা আব্দুল ওয়াহিদকে মূল সনদপত্র দাখিলের জন্য দুইটি নোটিশ করেছি। কিন্তু তিনি তার সনদপত্র দাখিল করেননি। আমরা সাধারণ সভা ডেকে তাকে আরও ৭ দিন সময় বাড়িয়ে দিয়েছি। এর মধ্যে যদি তিনি নির্দেশ প্রতিপালন করেননা তাহলেও তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম শেফু বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তের জন্য উপকমিটির কাছে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান তিনি।