ধর্মপাশা ও মধ্যনগর প্রতিনিধি ::
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ধর্মপাশা ও মধ্যনগর এই দুই উপজেলায় ঝড়ো বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়ায় ও বৈদ্যুতিক তার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় সোমবার বিকেল (২৭মে) তিনটা থেকে টানা ২৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। এতে করে প্রায় ৫১ হাজার গ্রাহকসহ বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল নি¤œ আয়ের মানুষজনকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ধর্মপাশা উপজেলা উপ আঞ্চলিক কার্যালয় ও গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলাটি নেত্রকোণা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে। এখানে পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ৫১ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। গত সোমবার সকাল থেকেই এই দুটি উপজেলায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস বইতে শুরু করে। ঝড়ো বাতাসে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে সড়কের ওপর পড়ে থাকায় যান চলাচল বিঘœ হয়। এছাড়া কয়েকটি স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়াসহ বৈদ্যুতিক তার ছিটকে পড়ায় গত সোমবার (২৭মে) বিকেল তিনটা থেকে এই দুটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ না থাকায় মুঠোফোন চার্জ করতে না পারায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষজন একে ওপরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এছাড়া চার্জ করতে না পারায় মঙ্গলবার বিকেলে বিদ্যুৎ নির্ভর যানবাহনগুলো সড়কে তেমন দেখা যায়নি। দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ না থাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় কার্যাদিও ব্যাহত হয়েছে।
ইজিবাইক চালক রোসেল (৩৪), রাসেল মিয়া (৪০), সজিব মিয়া (২৫) বলেন, ম্যালা সময় ধইরা কারেন্ট আছিইন না। এইডার লাইগা গাড়ির চার্জ করতে না হারায় গাড়ি লইয়া রাস্তায় বাইর অইতাম হারছি না। মঙ্গলবার বেইল্লা (বিকেল) সময় কারেন আইছে, গাড়িও চার্জ লাগাইছি।
ধর্মপাশা উপজেলার ধর্মপাশা বাজারের ব্যবসায়ী রুমান মিয়া (২৫) বলেন, নানা অজুহাতে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং দিয়ে থাকে। ঝড়ো বৃষ্টির কারণে সোমবার বিকেল তিনটা থেকে মঙ্গলবার বিকেল চারটা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ ছিল। এতে করে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ব্যবসা বাণিজ্যের খুব ক্ষতি অইছে।
মধ্যনগর উপজেলার মধ্যনগর বাজারের বাসিন্দা কলেজ ছাত্র আবীর হাসান ( ২২) বলেন, দীর্ঘ সময়ে ধরে আমাদের উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার বিকেল চারটার পর বিদ্যুতের দেখা মিললেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর পর কারেন্ট যাচ্ছে আর আসছে।
নেত্রকোণা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে থাকা ধর্মপাশা উপজেলা উপ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহা ব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. হাফিজুর রহমান মঙ্গলবার বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর এই দুই উপজেলায় প্রায় ৫১ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ঝড়ো বৃষ্টিতে বৈদ্যুতিক তারের ওপর গাছের ডালপালা পড়ায় ও বেশ কয়েকটি স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়ে বৈদ্যুতিক তার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে করে দীর্ঘসময় ধরে ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। আমরা এখনো মাঠে কাজ করছি। ঝড়োবৃষ্টি থেমে যাওয়ায় এই দুটি উপজেলার অধিকাংশ স্থানেই বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই সমস্যার সমাধানের জন্য কাজ চলছে। গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আমাদের সবরকম প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।