ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের দক্ষিণপাশে থাকা কবরস্থান চত্বরে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষিতে আকিব শাহ (১৪) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৫ ম) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ওই কিশোরের বাড়ি উপজেলার রাজাপুর গ্রামে। সে ওই গ্রামের কৃষক কামরুল হাসানের (৩৮) ছেলে। কিশোরটি উপজেলার বাদশাগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
এ ঘটনায় নিহত ওই কিশোরের বাবা বাদী হয়ে একই গ্রামের ইনসান (১৯), অন্তর শাহ (১৯), নাজমুল হোসেন (২০) ও রায়হান মিয়া (১৯) এই চারজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চারজনকে আসামি করে বৃহ¯পতিবার (১৬ মে) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ধর্মপাশা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
ধর্মপাশা থানায় দায়ের মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পাইকুরাটি ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের দক্ষিণ পাশে থাকা গ্রামবাসীর কবরস্থান রয়েছে। উপজেলার রাজাপুর গ্রামের শাহ জাহান কবীরের ছেলে ইনসান (১৯), আলী হোসেনের ছেলে অন্তর শাহ (১৯), স্বাস্তু মিয়ার ছেলে নাজমুল হোসেন (২০), সাইকুল ইসলামের ছেলে রায়হান মিয়া (১৯) এদের সঙ্গে একই গ্রামের কামরুল হাসানের ছেলে আকিব শাহের (১৪) সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলে আসছিল। বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ওই চারজন বসে রাজাপুর কবরস্থান চত্বরে বসে লুডু খেলছিল। এ সময় আকিব শাহ সেখানে গিয়ে লুডু খেলতে নিষেধ করায় তাকে তারা গালমন্দ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারাসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিন থেকে চারজন আকিব শাহকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মারলে আকিব শাহ ঘটনাস্থলেই অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। নাইমুল ও ইমন নামের দুজন শিশু ঘটনাটি দেখে চিৎকার দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা পালিয়ে যাচ্ছে দেখতে পায়। পরে আকিবকে অজ্ঞান অবস্থায় সেখান থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য নিয়ে এলে ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নাসরিন সাঈদ নয়ন তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত কিশোরের বাবা কামরুল হাসান (৩৮) বলেন, আমার ছেড়াডারে যারা মারছে হেরার আমি শাস্তি চাই।
ধর্মপাশা থানার ওসি মো. শামসুদ্দোহা বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। এই মামলার চারজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৩ থেকে চারজনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার দিন রাতেই এই চারজনকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে। মামলার এজাহারে এই চারজনকে প্রাপ্ত বয়স্ক দেখানো হলেও জন্মনিবন্ধন পর্যালোচনায় তাদের বয়স ১৮ নিচে রয়েছে। যেহেতু ওই চারজন প্রাপ্তবয়স্ক নয়, তাই আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশু হিসেবে তাদেরকে থানা পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে। তাদেরকে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য আকিব শাহের লাশটি সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।