শহীদনূর আহমেদ ::
বিশ্বম্ভরপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটে সক্রিয় থাকার অভিযোগে নিজ দলের ডজনখানেক নেতাকর্মীকে শোকজ করলেও নিজের মার্কেটে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীকে নির্বাচনী অফিসের জন্য জায়গা দিয়েছেন এক বিএনপি নেতা! উপজেলা সদর সংলগ্ন বাঘমারা পয়েন্টে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের মালিকানাধীন মার্কেটের একটি কক্ষে নির্বাচনী অফিস খুলেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান প্রার্থী দিলীপ কুমার বর্মণ। তাঁর এমন কাণ্ডে ক্ষুব্ধ দলীয় নেতাকর্মীসহ শোকজপ্রাপ্তরা।
জানাযায়, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ। পরবর্তীতে তার পক্ষে নির্বাচন করার অভিযোগে উপজেলার ডজনখানেক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করে উপজেলা বিএনপি। নোটিশে স্বাক্ষর করেন উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি অ্যাডভোকেট ছবাব মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম।
এদিকে, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় থাকার অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা উপজেলা বিএনপির সাধারণ স¤পাদক শফিকুল ইসলাম নিজের মালিকানাধীন মার্কেটে আওয়ামী নেতা ও চেয়ারম্যান প্রার্থী দিলীপ কুমার বর্মণকে নির্বাচনী অফিসের জায়গা দেওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
উপজলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক সিরাজ খন্দকার বলেন, নির্বাচনের শুরুর দিকে আমরা কয়েকজন একজন প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় হয়েছিলাম। কিন্তু দল থেকে সতর্ক করার পরে আমরা নিষ্ক্রিয় হয়ে যাই। পরবর্তীতে আমাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়। কিন্তু আমাদের নোটিশ করে নিজে আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে আঁতাত করে নিজের মার্কেটে নির্বাচনী অফিস করে দিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ স¤পাদক শফিকুল ইসলাম। তিনি তলে তলে দুইজন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।
তিনি আরও বলেন, তাঁর এমন দ্বিমুখী আচরণে দলের নেতাকর্মীরা চরমভাবে ক্ষুব্ধ। বিষয়টি নজরে এনে দলীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নিকট আমরা দাবি জানাই।
চেয়ারম্যান প্রার্থী দিলীপ কুমার বর্মণের সমর্থক আব্দুল কদ্দুছ বলেন, বিশ্বম্ভরপুরে রাজনৈতিক সম্প্রীতি রয়েছে। যে কারণে বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলামের মার্কেটে আমরা নির্বাচনী অফিস করতে পেরেছি। এর জন্য ২ হাজার টাকা ভাড়া প্রদান করা হবে বলে দাবি করেন তিনি।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ স¤পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার মার্কেটের দোকানঘরটি অন্য একজনকে ভাড়া দিয়েছিলাম। সে আমাকে না বলে নির্বাচনী অফিস খুলে ফেলেছে। আমি নিজ থেকে কোনো প্রার্থীকে অফিস করার সুযোগ দেইনি।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমরা অবগত নই। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
উল্লেখ্য, আগামী ২১ মে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এতে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ স¤পাদক দিলীপ কুমার বর্মণ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ রফিকুল ইসলাম তালুকদার, যুবলীগ নেতা রনজিত চৌধুরী রাজন, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা মোহন মিয়া বাচ্চু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।