স্টাফ রিপোর্টার ::
জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অর্ধ শতাধিক বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয় নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়। একটি টিনসেড গৃহ ও একটি একতলাবিশিষ্ট দালানকোঠায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ক্ষেত্র সংকুলান না হওয়ায় একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য বিভিন্নভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেন বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বিদ্যালয়ের জন্য ৪র্থ তলাবিশিষ্ট একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজের অনুমোদন দেয় শিক্ষা অধিদপ্তর। এই ভবন নির্মাণকাজের দায়িত্ব পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক অমল কান্তি চৌধুরী। কিন্তু দীর্ঘ সাড়ে চার বছরেও একাডেমিক ভবন নির্মাণ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
জানাযায়, ৩ কোটি ২৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫৪০ দিনের মধ্যে ভবনটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু প্রায় সাড়ে চার বছরে ঠিকাদার কাজটি শেষ করেনি। এ জন্য ঠিকাদারের অনিয়ম-অবহেলাকে দায়ি করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-অভিভাবকবৃন্দ। বিষয়টি প্রধান শিক্ষক সুজিত চন্দ্র সরকার সুনামগঞ্জ জেলা শিক্ষা বিভাগকে অবহিত করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর জেলা শিক্ষা বিভাগের উপসকারী প্রকৌশলী পারভেজ ইষান ও মো. আকরাম উদ্দিন নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন। এ সময় নির্মাণকাজে ২৬টি ত্রুটি ও অনিয়ম শনাক্ত করেন তারা। একই সাথে এগুলো এক মাসের মধ্যে সংশোধন করার নির্দেশ দেন। ২৬টি অনিয়ম স্বহস্তে লিখে সংশোধনের জন্য স্বাক্ষর কপি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার উভয়পক্ষের হাতে তোলে দেন ওই দুই কর্মকর্তা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক দিপালী রানী তালুকদার, জামালগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বিদ্যালয়ের সাবেক বিদ্যুৎসাহী সদস্য অঞ্জন পুরকায়স্থ, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য সুষেন তালুকদার ও রণধীর তালুকদারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক সুজিত চন্দ্র সরকার বলেন, নতুন ভবন নির্মাণকাজ ২০২০ সালে শুরু করে ২০২৩-২০২৪ সালেও সম্পন্ন না হওয়ায় প্রায় সাড়ে ৪ বছর যাবৎ শ্রেণিকক্ষের অভাবে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। পুরাতন টিনসেড গৃহের আসবাবপত্র শ্রেণিকক্ষে রাখার কারণে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে গাদাগাদি করে বসিয়েও পাঠদান করা যাচ্ছেনা।
তৎকালীন সভাপতি দিগেন কুমার পুরকায়স্থ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের ক্ষেত্রে এতো অবহেলা ও অনিয়ম ঠিকাদার সমাজের জন্য বদনাম এবং কলঙ্ক ছাড়া আর কিছুই নয়। ভবন নির্মাণকালীন ঠিকাদারের উপস্থিতি ও মনিটরিং খুবই কম ছিল।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বলেন, ভবন নির্মাণকাজের নির্দেশের পর থেকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির ৩টি কমিটি গঠন হয়েছে। কিন্তু এখনও ভবন নির্মাণ শেষ হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের বিদ্যালয়টিতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপ কামনা করছি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ফেনারবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলাপ করে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।