তাহিরপুর প্রতিনিধি ::
ধান ও বাদামের আড়ত চোখের সামনে আগুনে পুড়ে গেলেও রক্ষা করতে পারেননি চেয়ে চেয়ে দেখেছেন বলেই কাঁদতে শুরু করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ। চোখের জল মুছতে মুছতে তিনি জানান, জমিজমা বিক্রি করে এই বাজারে দোকান ভাড়া নিয়ে ধান ও বাদামের আড়ত দিয়ে ব্যবসা করছিলাম। সকালে আগুনে পুড়ে সবকিছু ছাই হয়ে গেছে। আমার আর কিছুই রইল না, আমি একবারেই পথে বসে গেলাম। আগামী দিনগুলো কিভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে পার করব জানি না। আমার সব শেষ হয়ে গেছে।
শনিবার (১৬ মার্চ) সকাল ৬টায় তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বাংলা বাজারে বিল্লাল মিয়ার মার্কেটে অগ্নিকা-ে ঘটনাটি ঘটেছে। এতে ৮টি দোকান ভস্মিভূত হয়। ব্যবসায়ীরা জানান, এতে অর্ধ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা জানা যায়নি। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা হলেন জহিরুল মিয়া (২৫), আব্দুল মান্নান মাস্টার (৪৫), মোহাম্মদ সুরুজ আলী (৬২), শুক্কুর আলী (৬৫), বিল্লাল মিয়া (২৮), সবুজ মিয়া (৩৫), সুরহাপ কাজী (৪০)।
প্রত্যক্ষদর্শী বাজারের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ইসলাম উদ্দিন বলেন, সেহেরি খেয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। আগুন লাগার খবর শুনেই দৌড়ে এসে দেখি বাজারের বিল্লাল মিয়ার মার্কেটের ৮টি দোকানের একটি দোকান আগুনে ঘর পুড়ছে। এরপরই অন্য দোকানগুলো আগুনে পুড়তে শুরু করে। গ্রামের সকল মানুষ একত্রিত হয়ে পানির মেশিন লাগিয়ে কয়েক ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। কিন্তু ততক্ষণে ৮টি দোকানের স¤পূর্ণ মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
বাজার কমিটির সভাপতি আবু তাহের জানান, ব্যবসায়ীদের জমিজমা বিক্রি করে গড়ে তোলা স্বপ্ন একনিমেষেই শেষ হয়ে গেছে। এই ব্যবসায়ীদের আর কিছু বাদ পড়েনি, যা আগুনে পুড়ে যায়নি। এখন সরকার যদি এই সব ব্যবসায়ীদের পাশে না দাঁড়ায় তাহলে তারা নিঃস্ব হয়ে যাবে।
উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুক মিয়া জানান, বাংলাবাজারে আগুন লাগার খবর শুনে গিয়ে দেখি আগুনে ৮টি দোকান পুড়ে গেছে। এই সব ব্যবসায়ীরা হাহাকার করছেন। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য তাদের সরকারিভাবে সহযোগিতা করা প্রয়োজন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভিন জানান, এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।