1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ১১:৩৩ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বিকাশ-নগদে উপবৃত্তির টাকা চান না শিক্ষার্থীদের মায়েরা

  • আপডেট সময় সোমবার, ১১ মার্চ, ২০২৪

বিশেষ প্রতিনিধি ::
বিকাশ ও নগদের বদলে সরাসরি বা ব্যাংকে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন হাওরাঞ্চলের মায়েরা। এই পদ্ধতিতে উপবৃত্তির টাকা দেওয়ায় অনেক মায়েদের টাকা দুষ্কৃতিকারী চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেন। এছাড়াও হাওরাঞ্চলের বিদ্যালয়ে মিডডে মিল চালু ও দুর্গম এলাকায় সড়ক নির্মাণ এবং বর্ষায় স্কুলের জন্য বিশেষ জলযানের দাবিও জানিয়েছেন মায়েরা।
রবিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে হাওরাঞ্চলের ১১ উপজেলার মায়েদের নিয়ে ‘মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণ ও মা সমাবেশে’ এসব দাবি জানান মায়েরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী এমপি। প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে হাওরাঞ্চল অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ থেকেই অভিভাবক ও মায়েদের নিয়েই সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছেন তিনি। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূরজাহান খাতুন, যুগ্ম সচিব মনীষ চাকমা, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. জালাল উদ্দিন, সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত মায়েরা বক্তব্য দেন। এছাড়াও শিক্ষক, সাংবাদিক ও সুধীজনও বক্তব্য দেন।
শাল্লা উপজেলার উজানগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক ঝুমা রায় বলেন, আমাদের হাওরাঞ্চলের মানুষ বেশিরভাগই গরিব। তারা সন্তানদের স্কুলে টিফিন দিতে পারেন না। তাই স্কুলে জলখাবারের ব্যবস্থা করলে আমরা মায়েরা স্বস্তিতে থাকতে পারতাম। কারণ আমাদের অনেক অভিভাবকদের দ্বারাই টিফিন দেওয়া সম্ভব হয়না।
জগন্নাথপুর উপজেলার ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক মা ইয়ারুন নেসা বলেন, আমাদের সন্তানদের উপবৃত্তির টাকা বিকাশ ও নগদে না দিয়ে ব্যাংকে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। কারণ অনেক অভিভাবক মা মোবাইলে ম্যাসেজ পেয়ে টাকা তোলতে গিয়ে দেখেন তাদের টাকা নেই।
দিরাই উপজেলার পানগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক মা সুমনা দাস বলেন, আমরা গরিব অভিভাবকরা বাচ্চাদের স্কুলে টিফিন দিতে পারিনা। স্কুলে টিফিন দেওয়া হলে আমাদের বাচ্চাদের জন্য অনেক ভালো হবে। এছাড়া হাওরের বিদ্যালয়ের সঙ্গে পাড়া মহল্লার সড়ক যোগাযোগ না থাকায় বর্ষায় যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানান তিনি।
দোয়ারাবাজার উপজেলার টেংরাটিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক মা হনুফা বেগম বলেন, পরীক্ষা পদ্ধতি ফিরিয়ে আনতে হবে। না হলে বাচ্চাদের মূল্যায়ন যথাযথ হবেনা।
ছাতকের জাউয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক নাদিরা সুলতানা বলেন, তাদের স্কুলটি হাইওয়েতে থাকায় শব্দদূষণে শিশুদের সমস্যা হচ্ছে। তাই এখান থেকে স্থানান্তরের দাবি জানান তিনি। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান সময় সকাল ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত করার দাবি জানান।
জামালগঞ্জের গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক মা স্বপ্না আক্তার বলেন, আমাদের সন্তানদের উপবৃত্তির টাকা হাতে হাতে দিতে হবে। বিকাশ-নগদে অনেক সময় মার যায়। ম্যাসেজ আসলেও দোকানে গিয়ে টাকা উত্তোলন করা যায় না। তিনি দুর্গম এলাকার বিদ্যালয় হিসেবে বর্ষায় শিশুদের স্কুলে যাওয়ার জন্য বিশেষ নৌকার দাবি জানান।
তাহিরপুর উপজেলার গাগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক মা ফাহিমা আক্তার সব শিশুদেরকে স্কুল ড্রেস দেওয়ার দাবি জানান। তিনিও বিকাশ ও নগদের বলে হাতে হাতে উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার দাবি জানান। এভাবে অভিভাবক মায়েরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অভিভাবক প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলীকে কাছে পেয়ে নানা দাবি দাওয়া তুলে ধরেন।
মায়েদের গুচ্ছ দাবির জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী এমপি বলেন, সবাই সুন্দর ও ভালো জায়গায় যেতে চায়। সুন্দর ও উন্নত জায়গা নিয়ে আসলে ভাবার কিছু নাই। আমার মনে হয়েছে যদি আমি দুর্গম এলাকা থেকে শুরু করতে পারি তাহলে মনে হবে আমি প্রান্তিক মানুষের জন্য কিছু করতে পারবো। আর এই ভাবনা থেকেই হাওরে চলে এসেছি। রমজানের মাঝামাঝি সময়ে পাহাড়ে যাবো।
অনলাইন বদলিতে অনিয়মের প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হলে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষক বদলি সহজ করার জন্য অনলাইন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এতে ট্রান্সপারেন্সি এসেছে। এই ট্রান্সপারেন্সির জন্যই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব কিছু ডিজিটালাইজ করে দিয়েছেন। আমরাও বদলি ও নিয়োগে ট্রান্সপারেন্সি এনেছি। এখন স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিকের জন্য তিনি স্কুল ফিডিং ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগে নিয়োগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হতো এই অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, আগে নিয়োগে কি হতো দেশবাসী সব জানে। তবে ২০২৩ সন থেকে নিয়োগে স্বচ্ছতা এসেছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com