হোসাইন আহমদ ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলায় মহাসিং নদীর পাড়ে দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা ফসলরক্ষা বাঁধে দ্বিতীয় বারের মতো ধস দেখা দিয়েছে। বাঁধটি ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে প্রথম দফায় ধসে গেলে পিআইসি কমিটির লোকজন ধস ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী জিও ব্যাগ ফেলে ধস ঠেকাতে কাজ শুরু করে। তবে গতকাল রবিবার (৩ মার্চ) ভোর থেকে আবারও বাঁধের গোড়ায় ধস দেখা দিয়েছে।
জানাযায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলা দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তার বাঁধ ৬নং পিআইসি কমিটির অধীনে। দেখার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের পিআইসি নং-৬ এর অধীনে প্রায় ১০০০ মিটার বাঁধের কাজ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকার উত্তর পার্শ্বে ‘ছাইয়া কিত্তা’ নামক জায়গায় দুই বছর আগে বর্ষা মৌসুমে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রাতের আঁধারে মহাসিং নদী ও বাঁধের পশ্চিমে বালি মাটি ও ভিট বালি উত্তোলন করে। এতে বাঁধের দুই পাশে মহাসিং নদীর অংশে ও হাওরের অংশে বড় বড় দুইটি ডোবার সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় ২৭ ফুট গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এরপর থেকে এই বাঁধে প্রতি বছর এই জায়গায় ধসে পড়ার ঘটনা ঘটছে। প্রাণপণ চেষ্টা করে প্রতি বছর এই অংশে ধসে পড়া বাঁধ রক্ষা করা হয়। চলতি বছর এই বাঁধে এ নিয়ে দ্বিতীয় বার বাঁধটি ধসে পড়েছে। প্রথমবার প্রায় ৭দিন আগে এই
বাঁধের দু’পাশে ফাটল দেখা দিয়ে বাঁধটি ধসে পড়ে। এরপর ধসে পড়া অংশ মেরাতম করতে ৩শত জিও ব্যাগে মাটি ভরাট করে দু’পাশে ডাম্পিং করে বাঁধটি মেরামত করা হয়।
গতকাল রবিবার (৩ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধের কাজটি শেষে পর্যায়ে এসেও আবারও বাঁধের দুই পাশে ফাটল ও গোড়ায় ধস দেখা দিয়েছে। ছাইয়া কিত্তা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ শেষ করে ঘাস লাগানোর কাজ চলছে। কিন্তু বাঁধের দুই পাশে আবারও ভাঙন শুরু হওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে ফসলরক্ষা বাঁধ এবং আর্থিক সংকটে পড়ছেন পিআইসি কমিটির লোকজন।
আস্তমা গ্রামের কৃষক ও পিআইসি কমিটির সভাপতি আজিমুল হক জানান, আমার প্রকল্পে এ নিয়ে দ্বিতীয় বার ফাটল দেখা দিয়ে বাঁধের মাটি ধসে পড়েছে। এর আগে ৩শত জিও ব্যাগ ব্যবহার করে বাঁধের এই অংশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজাইন অনুযায়ী মেরামত করেছি। শনিবার সন্ধ্যা থেকে আবারও এই অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। এখন বাঁধের দু’পাশের বেশ জায়গা ধসে পড়েছে। আমি এই বাঁধের কাজ শেষ করতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এখন ভাঙন রোধে আরও অর্থ বরাদ্দ দিয়ে দুইটি গর্ত মাটি ভরাট করা প্রয়োজন। না হলে বাঁধ রক্ষা করা যাবেন না। বৈশাখ মাসে হাওরে পানি এলে এ বাঁধ হুমকির মুখে পড়বে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা কাবিটা কমিটির সদস্য সচিব ইয়াছিন খান বলেন, দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা হাওরের বাঁধটি এ নিয়ে দ্বিতীয় বার ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর আগে ৩শত জিও ব্যাগ ডা¤িপং করে ভাঙন বন্ধ করেছি। এখন আবার সেই জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফসলরক্ষা বাঁধের একপাশে মহাসিং নদীর গর্ত অন্য পাশে গভীর গর্ত থাকায় বার বার বাঁধটি ধসে যাচ্ছে। হাওর অংশের গর্তটি এখন অনেকটাই ভরাট হয়েছে। ভাঙনও বন্ধ হয়েছে। এখন মহাসিং নদীর পাশের গর্তটিই বাঁধের জন্য হুমকি হিসেবেই আমরা দেখছি। এই জায়গায় আরো জিও ব্যাগ দিয়ে ডা¤িপং করে তার পার বাঁধের ¯ে¬াপের কাজ করতে হবে। আশা করি ২-৩ দিনের মধ্যেই এই কাজটি স¤পন্ন করতে পারবো।