1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের ‘বিপুল অংশগ্রহণ না করার’ বিষয়টিকে দৃশ্যত ‘রাজনৈতিক বিজয়’ হিসেবে প্রচার করলেও কার্যত ভেতরে ভেতরে বিএনপিতে নানান বিষয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। এই আলোচনার এখন মূল বিষয়বস্তু দলের বিদেশ বিষয়ক নীতি। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারত-বিরোধিতার প্রচারণার রাজনীতিকীকরণ, আঞ্চলিক কৌশলপত্র প্রণয়নের বিষয়টি উল্লেখযোগ্য।
বিএনপির ফরেন রিলেশন্স কমিটি (এফআরসি) ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, দলের বিদেশ বিষয়ক নীতিতে আবারও চীনকে গুরুত্ব দেওয়ার আলোচনা রয়েছে। চীনের সঙ্গে আবার যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতোমধ্যে দলের একজন বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের দায়িত্বশীলকে প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।
বিদেশ বিষয়ক কমিটির একাধিক সদস্য গণমাধ্যমকে বলেন, প্রোগ্রাম ও পলিসির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। সম্প্রতি ভারত-বিরোধিতার বিষয়টিকে অনেকেই দলের পলিসি মনে করলেও আদতে সে চিন্তা নেই বিএনপির। সামাজিকভাবে ভারতীয় পণ্য বর্জনের বিষয়টি ‘প্রোগ্রামগত’ বিষয়। এক্ষেত্রে পলিসিকে মিলিয়ে ফেলা সঠিক হবে না। দলের মূল পলিসি জিয়াউর রহমানের বিদেশনীতিকে সামনে রেখেই করা আছে। সেভাবেই চলবে।
সোমবার (২৬ মার্চ) অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও ভারত ইস্যুটি নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয়নি বলে জানান কমিটির একজন নেতা। তিনি বলেন, ভারত ইস্যুতে এখন বিএনপিতে ব্যক্তিগত মতাদর্শিক লড়াই চলছে। এতে দলের উপকার হবে না।
দলের বিদেশ বিষয়ক কার্যক্রম ও ভারত-বিরোধিতা, চীনের সঙ্গে অবস্থানে পরিবর্তন আসছে কিনা – এমন প্রশ্নে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলবো না এখন।
বিএনপির আন্তর্জাতিক-বিষয়ক কাজে যুক্ত একাধিক নেতা জানান, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর দলের শীর্ষ নেতৃত্ব পুরো সংগঠনেই গতি ফেরাতে তৎপর। এই তৎপরতার মধ্যে পড়েছে দলের ফরেন রিলেশন্স কমিটিও। ইতোমধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা-পর্যালোচনা শুরু করেছেন। এ ক্ষেত্রে কমিটির নেতৃত্বে কোনও পরিবর্তন আসছে না। কমিটির প্রধান হিসেবে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী থাকছেন বলে জানান এই নেতারা। তারা উল্লেখ করেন, নতুন করে সদস্য, নতুন কর্মকৌশল, অঞ্চলভিত্তিক ডেস্ক, নিয়মিত বৈঠক ও পর্যালোচনা করার বিষয়টি আমলে নিচ্ছে শীর্ষ নেতৃত্ব।
আন্তর্জাতিক স¤পর্ক নিয়ে কাজ করেন এমন তিন জন নেতা জানান, মূলত আগামী দিনের রাজনৈতিক কৌশল নির্ণয় করার জন্য বিগত নির্বাচনে কোথায় কোথায় আরও উন্নতি করার সুযোগ ছিল, তা বিবেচনায় নিয়ে কমিটির সদস্যদের সঙ্গে পৃথকভাবে আলাপ করছেন তারেক রহমান। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন সদস্য তার কাছে দলের পরবর্তী আন্তর্জাতিক স¤পর্ক বিষয়ক মতামত জমা দিয়েছে। কেউ লিখিতভাবে, কেউ মৌখিকভাবে মত দিয়েছেন।
যদিও স্থায়ী কমিটির কোনও কোনও সদস্য ‘ফরেন রিলেশন্স কমিটিকে ব্যর্থ’ পর্যবসিত করার তৎপরতা শুরু করেছেন বলে দাবি করেন এক নেতা। তিনি উল্লেখ করেন, বিদায়ী বছরের ২৯ অক্টোবর গ্রেফতার হন ফরেন রিলেশন্স কমিটির প্রধান আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গ্রেফতার হওয়ার আগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, শামা ওবায়েদসহ তিনি বিদেশি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ও দূতাবাসে বৈঠক করেছেন।
বিদায়ী বছরের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে কূটনীতিক পাড়ায় বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের দৌড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণার পর ২৫ মে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাসায় বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক স¤পাদক শামা ওবায়েদ ছিলেন সেখানে।
বিদায়ী বছরের ১১-১৪ জুলাই ঢাকা সফরে আসেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু-সহ চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। ওই দলের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের বৈঠক হয়নি। তবে ডোনাল্ড লু অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতির বার্তা নিয়ে যান।
নির্বাচনের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান। নির্বাচনের আগে আন্দোলন চলাকালে ভারতের দিল্লিতে নানা প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হন স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
নির্বাচনের আগে সবচেয়ে আলোচনায় আসে ১২ অক্টোবর ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বৈঠক। যদিও মির্জা ফখরুলের পক্ষ থেকে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠকের বিষয়ে স্বীকার করা হয়নি।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সফররত ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তারের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও শামা ওবায়েদ।
দলের একজন দায়িত্বশীল বলেন, নির্বাচন-পূর্ব দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকগুলোতে বন্ধু রাষ্ট্র কী বার্তা দিয়েছিল এবং বাস্তবে কী করা হয়েছে, তা আলোচনায় এসেছে। এই আলোচনার ভেতরেই উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়টিকে নতুন করে ঝালাই করার।
প্রভাবশালী এই দায়িত্বশীল আরও বলেন, আঞ্চলিক পলিসি বোঝালে ভারত ও চায়নার প্রসঙ্গ আসে, পাকিস্তানের তো নামই উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। এ ক্ষেত্রেও সমস্যাও আছে। বিশেষ করে গত বছরের ২৩ অক্টোবর ইন্দো প্যাসেফিক স্ট্র্যাটেজি নিয়ে কৌশলপত্র ঘোষণা করে বিএনপি। তাহলে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) কৌশল নিয়ে কী অবস্থান নেবে বিএনপি।
কৌশলপত্র নিয়ে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছিলেন, নিরাপত্তা সহযোগিতা, নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা, সম্প্রীতি, নিরাপদ নৌচলাচল, টেকসই অর্থনীতি, মুক্তবাণিজ্য, জলবায়ু, স্বাস্থ্য, মহামারির মতো হুমকিগুলো মোকাবিলার পাশাপাশি একটি অবাধ, মুক্ত, উদার, গণতান্ত্রিক, ও নিরাপদ ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল গ্রহণ করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এফআরসির প্রধান আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কারও সঙ্গে দূরত্বের কিছু নাই আমাদের। সরকারের সঙ্গে সরকারের বাইলেটারাল স¤পর্ক থাকেই। আমি তো বিএনপির সঙ্গে চীনের দূরত্ব দেখি না। আমাদের সঙ্গে দূরত্বের কিছু নেই। এখন ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ, চাইনিজ সরকার তাদের সঙ্গে কাজ করছে। বিএনপি সরকারে থাকলেও কাজ করবে। এটা ব্যতিক্রম কিছু না।
বিএনপির ভেতরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিআরআই ও ইন্দো-প্যাসিফিকে অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক কৌশলে কোনও বিরোধিতা সৃষ্টি হবে কিনা, এমন প্রশ্নও বিএনপির কেউ কেউ তুলেছেন। এ ক্ষেত্রে লক্ষণীয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ উভয় উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। গত বছর ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলপত্র প্রণয়ন করে সরকার। বিআরআইয়ে ক্ষমতাসীন সরকার যুক্ত হয় একদম প্রথম দিকে।
২০১৩ সালে চীনের নেতৃত্বে বিআরইয়ের উদ্যোগ শুরু হওয়ার পর ২০১৬ সালে এতে যুক্ত হয় বাংলাদেশ। ওই বছরের অক্টোবরে ঢাকা সফররত চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের উপস্থিতিতে সেই চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশ। প্রসঙ্গত, সফরে চীনের রাষ্ট্রপতি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। ওই সাক্ষাতেও সিল্ক রোড নিয়ে আলোচনা হয়।
জানতে চাইলে ফরেন রিলেশন্স কমিটির সদস্য ও সাংগঠনিক স¤পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল। সবার সঙ্গেই সুস¤পর্ক বজায় রাখার পক্ষের দল। আমার মতে, সব সুপার পাওয়ার রাষ্ট্র, কেবলই চীন নয় – ভারত, ইইউ, রাশিয়া, স্ক্যান্ডেভিয়ান কান্ট্রি, আশিয়ানভুক্ত দেশ, সাউথ এশিয়া রিজিয়নের দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ স¤পর্ক থাকা উচিত। আমরা বিরোধী দলে থাকি বা সরকারি দলে, উভয় ক্ষেত্রে এটা বিবেচ্য। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই দেশের স্বার্থকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিতে হবে। আমাদের দেশের মানুষ এখন যেমন ভারতের ওপর রেগে আছে – কারণ, মানুষ মনে করে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যত নিপীড়ন অত্যাচার করে অবৈধ প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় আছে, আওয়ামী লীগের নেতারা প্রতিনিয়ত সেটা বলছেনও, এসব কারণে ভারতবিরোধী সেন্টিমেন্ট তৈরি হয়েছে। এটা ন্যাচারাল প্রতিক্রিয়া।
চীনের সঙ্গে বিএনপির বিরোধিতার সূত্রপাত :
১৯৭৬ সাল থেকে বিএনপির সঙ্গে চীনের আন্তরিক স¤পর্কের সূচনা। বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উদ্যোগের কারণেই ওই সময় চীন এগিয়ে আসে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষক অধ্যাপক তারেক শামসুর রহমান ‘চার দশকের পররাষ্ট্রনীতি’ শীর্ষক প্রবন্ধে লিখেন, চীনের সঙ্গে স¤পর্ক উন্নয়নের প্রশ্নে তার (জিয়াউর রহমান) অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। তিনি চীনের সঙ্গে শুধু স¤পর্ক বৃদ্ধিই করেননি, বরং বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতিতে চীনের উপস্থিতিকে প্রয়োজনীয় করে তুলেছিলেন। বেগম জিয়ার (১৯৯১-৯৬, ২০০১-২০০৬) বৈদেশিক নীতির উল্লেখযোগ্য দিক ছিল চীনের সঙ্গে স¤পর্ককে গুরুত্ব দেওয়া।
যদিও ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ঢাকায় তাইওয়ানের কনস্যুল খোলা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে চীনের স¤পর্কে অবনতি ঘটে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠক হয়, জানান বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। ওই বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বৈঠকে খালেদা জিয়া জানিয়েছেন, শহীদ জিয়াউর রহমানের সরকারের সময় থেকে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ স¤পর্ক শুরু হয়। এই স¤পর্ক অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ আশা করে, উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীন বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
২০১৬ সালের আগে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে বিএনপির ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল চীন সফর করেন। ওই সফরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, রুহুল কবির রিজভী আহমেদ প্রমুখ ছিলেন। এরপরের বছর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল চীন সফর গেলেও বিএনপি কোনও আমন্ত্রণ পায়নি।
২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে আবারও চীন সরকারের আমন্ত্রণে যান বিএনপির তিন নেতা। সেবার নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। বর্তমানে তিনি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও এফআরসি’র সদস্য। ২০২০ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপহার সামগ্রী পাঠায় ঢাকায় নিযুক্ত চীনা দূতাবাস।
চীনের সঙ্গে আবার বিরোধ সৃষ্টি হয় ২০২১ সালে। ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূতের একটি ভিডিও বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর বিবৃতি দেয় বিএনপি।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, চীন তার নিজ দেশে কী ব্যবস্থা বহাল রাখবে তা একান্তই তার অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ ঐতিহ্যগতভাবে অবাধ নির্বাচন ও প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার চর্চার মাধ্যমে তাদের রাষ্ট্রীয় মালিকানা চর্চা করেছে ও করবে। কেননা, প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার প্রয়োগই হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রাণ এবং জনগণের ক্ষমতা চর্চার একমাত্র মাধ্যম, যার মাধ্যমেই রাষ্ট্র জনগণের কাছে জবাবদিহিতে আবদ্ধ থাকে। এটাই জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গণতন্ত্র চর্চার সর্বজনীন পন্থা।
তাই চীনের প্রতি বিএনপি ও দেশবাসীর প্রত্যাশা, অবাধ নির্বাচন, মানবাধিকার তথা গণতন্ত্রের স্বার্থে ও দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের জনগণের বন্ধুত্বের স্বার্থে গণবিরোধী ও গণবিচ্ছিন্ন জবরদস্তিমূলক এই অবৈধ সরকার নয়, দেশের প্রকৃত মালিক জনগণের পাশেই তারা সবসময় দাঁড়াবেন, বলা হয় বিএনপির ওই বিবৃতিতে।
এই বিবৃতি-বিরোধিতার পর থেকে চীনের সঙ্গে স্বাভাবিক হতে পারেনি বিএনপি। মাঝখানে ২০২৩ সালের ২৩ জুন চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে কয়েক কার্টন উপহার পাঠালেও তা যায় কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে।
এ বিষয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক স¤পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির বলেন, ‘চীনের সঙ্গে আরও গভীরভাবে স¤পর্ক তৈরি করার জন্য বিএনপির চীন-দৃষ্টিভঙ্গিই সবচেয়ে বড়। বিএনপি এক চীন নীতি এবং আওয়ামী লীগ ‘ওয়ান চায়না পলিসি’তে বিশ্বাস করে। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ‘এক চীন নীতি’তে বিশ্বাস করতেন। আর এই নীতির কারণেই চীনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিএনপি। -বাংলা ট্রিবিউন

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com