1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ফসলহানি হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধের নির্মাণকাজ বর্ধিত সময়েও শেষ না হওয়ায় বৃহ¯পতিবার প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। ওইদিন সকালে জেলা আইনজীবী সমিতি ভবন প্রাঙ্গণে এই সমাবেশ করে হাওর বাঁচাও আন্দোলন, কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে সংগঠনের সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন অংশ নেন।
সমাবেশে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতারা বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী গেল ২৮ ফেব্রুয়ারি বাঁধের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনো অনেক হাওরে বাঁধের কাজ শেষ হয়নি। বাঁধ তদারকিতে থাকা পাউবো ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উদাসীনতা ও গাফিলতির কারণে বর্ধিত সময়েও বাঁধের কাজ শেষ না করায় আগাম বন্যার শঙ্কায় হাওরের কৃষকরা। বৃষ্টিপাতের আগে বাঁধের কাজ শেষ না গেলে ২০১৭ ও ২০২২ সালের মতো হাওরডুবিতে ফসলহানির আশঙ্কা রয়েছে।
বক্তারা বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করতে পারায় বাঁধ নির্মাণের জন্য এক সপ্তাহ সময় বৃদ্ধি করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বর্ধিত সময়েও ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়নি। দায়িত্বশীলদের গড়িমসিতে হাওরের ফসলহানি হলে কৃষকদের সাথে নিয়ে আন্দোলনের ডাক দেয়ার হুঁশিয়ার দেন বক্তারা।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি চিত্তরঞ্জন তালুকদারের সভাপতিত্বে ও হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ স¤পাদক ওবায়দুল হক মিলনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. মো. নজরুল ইসলাম সেফু, অ্যাড. বুরহান উদ্দিন দোলন, অ্যাড. মণীষ কান্তি দে মিন্টু, অ্যাড. সবিতা চক্রবর্তী, অ্যাড. মহসিন রেজা মানিক, হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু, হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সুখেন্দু সেন, হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ স¤পাদক বিজন সেন রায়, যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক নির্মল ভট্টাচার্য্য, সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব বখত বাহলুল, সহ-সভাপতি মো. আলীনুর, রবীন্দ্র দেব, সাংগঠনিক স¤পাদক একে কুদরত পাশা, শহীদনুর আহমেদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলা কমিটির সাধারণ স¤পাদক আবু সাইদ, সমাজকর্মী মহিম তালুকদার প্রমুখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. নজরুল ইসলাম সেফু বলেন, আমরা আইনজীবীরা কৃষকের সন্তান। এই কৃষির উপরেই আমাদের অর্থনীতি নির্ভর করে। বিগত সময়েও হাওরের বাঁধ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। আমরা আদালতে মামলা করেছি। এবারও বাঁধ নির্মাণ কাজের গড়িমসি দেখছি। সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিতে ফের হাওরডুবি হলে আইনজীবী সমাজ ঘরে বসে থাকবে না। অতীতের মতো কৃষকদের পাশে সবসময় থাকবে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ স¤পাদক বিজন সেন রায় বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের এক মাস পার হয়েগেছে বাঁধের কাজ কি পর্যায়ে আছে জেলাবাসী জানে না। যেকোনো সময় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি হলে নদী ভরাট হয়ে হাওরে পানি প্রবেশ করবে। কবে কাজ শেষ করা হবে, হাওরগুলো এখনো অরক্ষিত। তিনি আরও বলেন, বাঁধ নির্মাণকে একটি মহল ব্যবসা হিসেবে নিয়েছে। এতে সবাই জড়িত। বাঁধের কাজে অনিয়মের কারণেই কাজ যথাসময়ে শেষ করা যায় না। কোনো কারণে ফসলের ক্ষতি হলে প্রশাসন ও পাউবোকে এর দায় নিতে হবে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন জেলা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব বখত বাহলুল বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা দিচ্ছে বাঁধের জন্য। কিন্তু সময় মতো বাঁধ হয় না। এবার তাই হয়েছে। কৃষকদের আপদকাল চলে আসছে কিন্তু বাঁধ হয়নি। বাঁধের কারণে যদি হাওর ডুবে ফসল তলিয়ে যায় তাহলে এর দায় সংশ্লিষ্টদের নিতে হবে। আমরা কৃষকদের সাথে নিয়ে মাঠে থাকবো।
প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের পক্ষ থেকে সকল উপজেলার হাওরের বাঁধ পরিদর্শন পরবর্তী কৃষক সমাবেশ, স্মারকলিপি প্রদান, প্রেস কনফারেন্সসহ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ জেলার ১২টি উপজেলায় ছোট-বড় ৯৫টি হাওরে এবার সোয়া ২ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এসব হাওরে বেড়িবাঁধ আছে ১ হাজার ৭১৮ কিলোমিটারের মতো। পাউবো এবার ৩৮টি হাওরে ৫৯১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধে ৭৩৫টি প্রকল্পে কাজ করছে। এতে প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
হাওরে একসময় ঠিকাদারদের মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ হতো। ২০১৭ সালে হাওরে ব্যাপক ফসলহানির পর বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে তখন মামলাও হয়। এরপর পাউবো হাওরে বাঁধ নির্মাণে নতুন নীতিমালা করে। এতে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হয় ঠিকাদারদের। কাজে সরাসরি যুক্ত করা হয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য প্রকৃত কৃষক ও স্থানীয় সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের নিয়ে পাঁচ থেকে সাত সদস্যের একটি পিআইসি থাকে। একটি পিআইসি সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকার কাজ করতে পারে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com